স্বপ্নের সৈকতে এঁকে যাই পদচিহ্ন (প্রথম কিস্তি)
শুরুর কথা (প্রথম দিন)ঃ সারা রাস্তায় বার বার জ্যামে পড়া সত্ত্বেও আমাদের দক্ষ ড্রাইভার এবং তার চতুরতার কারণে আমরা সকাল সাতটার কিছু পরে পৌঁছুই টেকনাফে। সেখানে ভ্রমণ বাংলাদেশের সভাপতি আরশাদ হোসেন টুটুল ভাই দুই দিন আগে থেকেই পৌঁছে গিয়েছিলেন আমাদের সবকিছুর অগ্রিম বন্দোবস্ত করতে। আমরা প্রথমে চলে গেলাম টেকনাফের এক রেস্টুরেন্টে, সেখানে সবাই ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সেরে নিয়ে তৈরি হয়ে গেলাম প্রথম দিনের হাঁটার জন্য। আমাদের সকল ব্যাগ এন্ড ব্যাগেজ টুটুল ভাইয়ের কাছে জমা দিয়ে আমরা চান্দের গাড়ী করে চলে গেলাম টেকনাফ সৈকতে। সেখান থেকে শুরু হল আমাদের প্রথম দিনের হাঁটা। শুরুর কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে আমরা সবাই শুরু করলাম হাঁটা। প্রথম দিন আমাদের গন্তব্য দক্ষিণ শিলখালি ইউনিয়ন পরিষদ অফিস, সেখানেই আমরা প্রথম দিন রাত কাটাবো।
হাঁটা শুরু করতেই গায়ে লাগলো সাগরের নীল জলে ভেজা নোনা বাতাসের ঝাপটা, সারা রাতের বাস জার্নি করে ক্লান্ত শরীর নিমিষেই চনমনে হয়ে উঠলো। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে সবাই সৈকত ধরে হাঁটতে লাগলাম, কেউ ছবি তোলায় মত্ত থেকে, কেউ কানে হেডফোন গুঁজে দিয়ে গানের ভুবনে ডুব দিয়ে, আর কেউ কেউ হাজারো কথার গল্পে মত্ত হয়ে। এভাবে চলতে চলতে এগিয়ে চলল “ভ্রমণ বাংলাদেশ” এর হণ্টন দলটি। সাগরের নীলাভ জলরাশি, মাথার উপরে থাকা নীলাকাশ তার সাথে আদিগন্ত ছড়িয়ে থাকা নির্জন সৈকত, যার উন্মুক্ত বক্ষে আমরা ছাড়া মাঝে মাঝে কিছু জেলে পল্লীর লোকজনের দেখা পাচ্ছিলাম। ঘণ্টাখানেক হাঁটার পর আস্তে আস্তে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে আরম্ভ করলো। কেউ কেউ গতির কারণে আগ-পিছ হয়ে গেল, আবার কেউ কেউ শারীরিক সক্ষমতার ভিত্তিতে।
এই ইভেন্টে একটা সুবিধা ছিল, কেউ যদি হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে যায়, অথবা অন্য কোন কারণে হাঁটতে অপরাগ হয় তবে মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই উঠে আসতে পারবে মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন পিচ ঢালা রাস্তায়। আর এই সুবিধার কারণেই অনেকে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও হাঁটার জন্য চলে এসেছিল কক্সবাজার। সেই দলের অনেকে, সাথে আরও অনেকে যারা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হাঁটতে পারছিল না তারা উঠে গেল পাকা রাস্তায়, তারপর সিএনজি অটোরিক্সা’য় চড়ে চলে গেল দক্ষিণ শিলখালি ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের উদ্দেশ্যে। সবশেষ দলটি সন্ধ্যার পরপর পৌঁছল শিলখালি। সেখানে পৌঁছে সবাই গোসল সেরে খাওয়া দাওয়া শেষে যার যার বিছানাপত্র রেডি করে কেউ কেউ ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেল, কেউ কেউ বসে পড়ল আড্ডায়, কেউ কেউ বসাল গানের আসর...