মারিশ্যা টু রিজার্ভ বাজার ঘাট - এ লাইফ টাইম মেমোরেবল বোট জার্নি

ঢাকা থেকে যে কয়টা বাস সরাসরি তিন পার্বত্য জেলায় যাতায়াত করে তার মধ্যে বোধহয় শান্তি পরিবহণের খাগড়াছড়িগামী গাড়িটি সবচেয়ে বেশী ভেতর পর্যন্ত আপনাকে সরাসরি নিয়ে যাবে। আর সেই জায়গাটাই হল আজকের এই নৌভ্রমণের শুরুর স্থল, ‘মারিশ্যা’ যার নাম। যারা পাহাড়ে ট্রেকিং করেন, তাদের কাছে এগুলো কোন আহামরি জায়গা নয়, কিন্তু আপনি যদি আমার মত সৌখিন ভ্রমণকারী হন, তবে এই ভ্রমণের পুরোটাই আপনাকে স্বপ্নাতুর করতে এতটুকু কার্পণ্য করবে না। 

এই মারিশ্যা থেকে ছোট ষ্টীমার লঞ্চগুলো যাতায়াত করে রাঙামাটির রিজার্ভ বাজার ঘাট পর্যন্ত। সরাসরি বা লোকাল উভয় রকমের লঞ্চই রয়েছে। 


তবে একটা সমস্যা রয়ে গেছে, তা হল বর্ষার মৌসুম ছাড়া সরাসরি মারিশ্যা থেকে লঞ্চ চলাচল করে না। পানি কম থাকলে ‘মাইনিমুখ’ বা ‘লংগদু’ ঘাট থেকে আপনি শুরু করতে পারেন আপনার এই ভ্রমণ। 


তো ঢাকা থেকে আপনি যদি সরাসরি শান্তি পরিবহণে মারিশ্যা না আসতে চান, তাহলে অন্য যে কোন পরিবহণে করে খাগড়াছড়ি শহরে এসে সেখান থেকে লোকাল ট্রান্সপোর্টে সহজেই চলে আসতে পারেন মারিশ্যা, মাইনিমুখ বা লংগদু যে কোন ঘাটে। 


তবে যে ঘাট হতেই শুরু করুন না কেন, মাথায় রাখতে হবে বেলা এগারোটার পর শেষ লঞ্চ ছেড়ে যায়। আপনি যদি রাত দশটার গাড়িতে রওনা হন, তাহলে মোটামুটি সকাল সাতটা/আটটা’র মধ্যে খাগড়াছড়ি পৌঁছে যাবেন। 


এরপর সেখান হতে চান্দের গাড়ী বা লোকাল অন্য যে কোন পরিবহণে করে মারিশ্যা আসতে সময় লাগবে আরও ঘণ্টা দুয়েক। 


তাই আশা করা যায় আপনি খুব সহজেই ঢাকা থেকে রাতে রওনা হয়ে বেলা এগারোটার আগে মারিশ্যা পৌঁছে যাবেন। এক্ষেত্রে যদি দেখেন দেরী হয়ে গেছে তাহলে লংদু থেকে লঞ্চ ধরতে পারবেন। 


তো লঞ্চে উঠে ইচ্ছে করলে সিটে বসে বসে চারিদিকের মনোমুগ্ধকর সব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন, চাইলে চলে যেতে পারেন লঞ্চের খোলা ছাদে। 


চাইলে এক কাপ গরম চা আপনাকে দিতে সঙ্গ। 


ভাগ্য ভালো থাকলে দেখা পেয়ে যাবেন নানান রকম পাখী'দের। 



আমার মতে মারিশ্যা থেকে রাঙামাটি এবং রাঙামাটি হতে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত জলপথ ভ্রমণ বাংলাদেশের সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক নৌ পথ। 


এই পুরো পথ আপনাকে থাকতে হবে অবাক বিস্ময়ে তন্ময় হয়ে। 


পাহাড়ের বুক চিরে গড়ে তোলা কৃত্রিম কাপ্তাই লেক অথবা পাহাড়ি কাসালং নদী, কোনটাই আপনাকে এতটুকু কার্পণ্য করবে না আপ্যায়ন করতে। 


এরপর আর কি? ফুরফুরে বাতাসে চোখে সানগ্লাস, কানে হেডফোন গুঁজে দিয়ে হারিয়ে যান আপন ভুবনে। 









কি হল? মন ভরে নাই? আচ্ছা আসুন আরও কিছু ছবি দেখি, আমাদের মত সৌখিন মানুষ এই দেখেই সুখে থাকি। (ইয়ে আমি কিন্তু বেড়িয়ে এসছি এবংএই পোস্টের ছবিগুলো সব আমার নিজের তোলা :P ) 


















হুমম... অনেক হল, ঐ দেখা যায় রিজার্ভ বাজার ঘাট... 

Translate

বোকা পর্যটকের কথা

মানুষ যেমন হঠাৎ করেই কারো প্রেমে পড়ে, ঠিক তেমনই করে আমিও প্রেমে পড়েছি ভ্রমণের। আজব এক নেশায় নেশাগ্রস্থ, কবে থেকে জানি না। তবে নিজের আর্থ-সামাজিক অবস্থানে লড়াই করে টিকে থাকার পর ভ্রমণে মনঃসংযোগ করতে উদ্যত হই। সেই থেকে যখনই সময়-সুযোগ হয় বেড়িয়ে পড়ি ঘর হতে, ভ্রমণের তরে। মজার ব্যাপার হল, আমি সাইক্লিস্ট নই, সাঁতার কাটতে পারি না, না পারি ট্র্যাকিং, হাইকিং, ক্লাইম্বিং। কোন ধরণের এডভেঞ্চারধর্মী কোন গুণই আমার নেই, শুধু আছে ভ্রমণের শখ আর অদম্য ইচ্ছাটুকু। আর সেই ইচ্ছা থেকেই সময় সময় আমার ঘুরে বেড়ানো আর সেই গল্পগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখা এই ডায়েরীতে। আমার এই লেখাগুলো বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এবং ব্যক্তিগত ডায়েরীতে লেখা ছিল; সেগুলো সব একত্রে সংরক্ষণ করে রাখার নিমিত্তেই এই ব্লগ। যদি আপনাদের কারো এই লেখাগুলো কোন কাজে লাগে তবে আমার পরিশ্রম কিছুটা হলেও সার্থক হবে।

পোস্ট সংরক্ষণাগার

যোগাযোগ ফর্ম

প্রেরণ