বুদ্ধ ধাতু জাদী তথা স্বর্ণ জাদী - (স্বর্ণ মন্দির - বান্দরবান)

#

গল্পের ছবিসকল

  • স্বর্ণমন্দির - বান্দরবান
  • স্বর্ণমন্দির - বান্দরবান
  • স্বর্ণমন্দির - বান্দরবান
  • স্বর্ণমন্দির - বান্দরবান
  • স্বর্ণমন্দির - বান্দরবান
  • স্বর্ণমন্দির - বান্দরবান
  • স্বর্ণমন্দির - বান্দরবান
  • স্বর্ণমন্দির - বান্দরবান
শাহরিয়ার বেচারা তার থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্টটাকে টেনে নীচে নামিয়ে গোড়ালির নীচে নিয়ে আসলো। অনেকটা এরাবিয়ান জোব্বার মত পায়ের পাতার কাছে ঝুলছে। কিন্তু স্বর্ণমন্দিরের গেটে বসা দুই তরুন কিছুতেই তাকে ভেতরে ঢুকতে দিবে না। কারণ হাফ প্যান্ট পড়ে ভেতরে ঢোকা নিষেধ। কি যন্ত্রণা! 
অনেক কষ্টে তাদেরকে বুঝালাম যে, ভাইরে উনার গোড়ালি পর্যন্ত ঢাকা আছে; তাই সমস্যা কোথায়। অনেক দেনদরবারের পর তারা রাজী হল তাকে ঢুকতে দিতে। গতবছর স্বর্ণমন্দির ভ্রমণের সময় এই বিরম্বনায় পড়তে হয়েছিল আমাদের ‘ভ্রমণ বাংলাদেশ’ এর ভ্রমণ টিম’কে। বান্দরবান শহরে এসেছেন আর স্বর্ণমন্দির দেখতে যান নাই, এমন খুব কমই হয়ে থাকে। বান্দরবান শহরের অন্যতম জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট হল বুদ্ধ ধাতু জাদী তথা স্বর্ণ জাদী তথা স্বর্ণ মন্দির।
১৯৯৫ সালে শ্রীমং উ পঞঞা জোত মহাথের এই মন্দিরটি স্থাপন করেন। বান্দরবান শহর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে বালাঘাতের পুরপাড়া নামক এলাকার পাহাড়ের চুড়ায় এই বৌদ্ধ মন্দিরটির অবস্থান। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র এই তীর্থস্থানটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় ২০০৪ সালে। মিয়ানমার হতে নির্মাণ শিল্পী এনে এই মন্দিরের মূল নির্মাণ কাজগুলো করা হয়। মন্দিরের বাইরের অংশে ভিন্ন ভিন্ন প্রকোষ্ঠে তিব্বত, চীন, নেপাল, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ভূটান, মায়ানমার,কোরিয়া, জাপান ইত্যাদি দেশের শৈলীতে সৃষ্ট ১২টি দন্ডায়মান বুদ্ধ আবক্ষ মূর্তি এখানে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আর মন্দিরের অভ্যন্তরে কাঠের উপর অসাধারণ সুন্দর রিলিফ ভাষ্কর্য কর্ম মায়ানমারের কাঠের শিল্প-কর্মের ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করায়।
মন্দিরের অঙ্গসজ্জা মেরুন আর সোনালী রঙ দিয়ে হওয়াতে দূর থেকে দেখলে মনে হয় পুরো মন্দিরটিই স্বর্ণ দিয়ে মোড়ানো। আর এই বাহ্যিক রূপ থেকেই হয়ত মন্দিরটি ‘স্বর্ণ মন্দির’ নামে খ্যাতি পেয়েছে। স্বর্ন মন্দিরের বাহ্যিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি এর অবকাঠামোগত সৌন্দর্যও দেখার মত। এ মন্দিরের পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এক পুকুর। বৌদ্ধরা এ পুকুরকে সম্মানের চোখে দেখে; কারণ এটি যে দেবতা পুকুর! ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছাড়াও পূর্ণিমায় এখানে জড়ো হন হাজার হাজার পুণ্যার্থী।
এবারো ‘তিন দিনে তিন পার্বত্যজেলা ভ্রমণ’এর সময় স্বর্ণমন্দির দেখতে গিয়েছিলাম। ভালই লাগে পড়ন্ত বিকেলের কণে দেখা রোদে এই স্বর্ণমন্দিরের রূপসুধা। বান্দারবান ভ্রমণে গেলে অবশ্যই বিকেল বেলা ঘুরে আসবেন এই স্বর্ণমন্দির আর সেখান থেকে চলে যাবেন নীলাচল, যেখান থেকে সূর্যাস্ত আর গোধূলিবেলা... এক কথায় অপূর্ব। 

ভ্রমণকালঃ ২০১৩-২০১৪

Translate

বোকা পর্যটকের কথা

মানুষ যেমন হঠাৎ করেই কারো প্রেমে পড়ে, ঠিক তেমনই করে আমিও প্রেমে পড়েছি ভ্রমণের। আজব এক নেশায় নেশাগ্রস্থ, কবে থেকে জানি না। তবে নিজের আর্থ-সামাজিক অবস্থানে লড়াই করে টিকে থাকার পর ভ্রমণে মনঃসংযোগ করতে উদ্যত হই। সেই থেকে যখনই সময়-সুযোগ হয় বেড়িয়ে পড়ি ঘর হতে, ভ্রমণের তরে। মজার ব্যাপার হল, আমি সাইক্লিস্ট নই, সাঁতার কাটতে পারি না, না পারি ট্র্যাকিং, হাইকিং, ক্লাইম্বিং। কোন ধরণের এডভেঞ্চারধর্মী কোন গুণই আমার নেই, শুধু আছে ভ্রমণের শখ আর অদম্য ইচ্ছাটুকু। আর সেই ইচ্ছা থেকেই সময় সময় আমার ঘুরে বেড়ানো আর সেই গল্পগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখা এই ডায়েরীতে। আমার এই লেখাগুলো বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এবং ব্যক্তিগত ডায়েরীতে লেখা ছিল; সেগুলো সব একত্রে সংরক্ষণ করে রাখার নিমিত্তেই এই ব্লগ। যদি আপনাদের কারো এই লেখাগুলো কোন কাজে লাগে তবে আমার পরিশ্রম কিছুটা হলেও সার্থক হবে।

পোস্ট সংরক্ষণাগার

যোগাযোগ ফর্ম

প্রেরণ