ভ্রমণের অষ্টকাহন (একটি ভ্রমণ পরিকল্পনা সহায়িকা'র মেগা পোস্ট - Must Read, Otherwise Something You Missed)

আমরা সবাই কমবেশী ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে যে বেড়াতে পছন্দ করে না। আর বাংলাদেশের মানুষ মাত্রই বেড়ানো’র উপলক্ষ্য ঈদ-পূজা অথবা কোন বিশেষ ছুটিতে বেড়াতে যাওয়া। দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ, সাথে নিয়ে ঈদের টানা সপ্তাহখানেকের ছুটি। অনেকেই অনেক রকম ভ্রমণ পরিকল্পনা ফেঁদেছেন। তো সেই ভ্রমণে বের হওয়ার আগে আসুন ভ্রমণ বিষয়ক কিছু মৌলিক বিষয় সম্পর্কে একটু ভেবে নেই। আর এগুলোতে একটু খেয়ালী হলে আমার, আপনার ভ্রমণ আরও আনন্দদায়ক, আরও সুন্দর হবে আশা করি। 

ভ্রমণের স্থান নির্বাচন (কোথায় যাবো?)

ভ্রমণ তথা বেড়াতে যাওয়ার বেলায় প্রথম যে প্রশ্নটি মাথায় আসে তা হল, কোথায় যাওয়া যায়? এক্ষেত্রে আপনাকে খুব ঠাণ্ডা মাথায় আপনার হাতে মোট কয়দিন সময় আছে, আপনার বাজেট কত, আপনি কেমন জায়গা বেশী পছন্দ করেন (সাগর, পাহাড়, বন ইত্যাদি), আপনার ভ্রমণ দলের ধরন (বন্ধু-বান্ধব, পরিবার, মিশ্র ইত্যাদি), ভ্রমণ স্থানের এভেইলেবল ফ্যাসিলিটিজ ইত্যাদি বিষয়গুলো ভেবে এমন স্থান নির্বাচন করুণ যেখান থেকে বেড়িয়ে আসার পর আপনি পরিপূর্ণ মানসিক তৃপ্তি লাভ করবেন।

ভ্রমণের সময় নির্বাচন (কখন যাবো?)

ভ্রমণের সময় নির্বাচন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই বর্ষায় আপনি হাওড়-বিল-ঝরনা দেখতে যেতে পারেন, পারেন সবুজ বন দেখতে যা এই সময়েই সবচেয়ে সুন্দর। আবার এই সময়ে নদী, সমুদ্র থাকে উত্তাল, আবহাওয়া থাকে বৈরী। তাই ওদিকে যাওয়ার উপযুক্ত সময়ে বর্ষার শেষে, শীতে অথবা শীতের শুরুতে। তাই কোন জায়গা ভ্রমণের উপযুক্ত সময় কোনটা এটা বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরী।


 

ভ্রমণের পরিবহণ নির্বাচন (কিসে করে যাবো?)

ভ্রমণের পরিবহণ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। আপনি বাস-লঞ্চ-ট্রেন-প্লেন-প্রাইভেট কার, কোনটায় যাবেন এটা নির্বাচন করা জরুরী। রাশ প্রিয়ডে ট্র্যাফিক জ্যাম এড়াতে স্থলপথ পরিবহণ না করাই শ্রেয়। এক্ষেত্রে ট্রেন প্রথম পছন্দ হতে পারে, আর সামর্থ্যবান যারা, তাদের জন্য যদি এভেইলেবল থাকে তবে প্লেন। তবে যে পরিবহণই আপনি ব্যাবহার করেন না কেন, সব থেকে বেশী যে বিষয়টা লক্ষ্য রাখবেন, তা হল আপনার জীবনের নিরাপত্তা, আপনার সুরক্ষা।


ভ্রমণকালীন আবাস (কোথায় থাকবো?)

যেখানেই যান না কেন, যদি রাত্রিযাপন করতে হয়, তবে অবশ্যই ভ্রমণকালীন আবাস আগে থেকে ঠিক করে যাওয়াই শ্রেয়। যদি সম্ভব না হয়, তবে ভালোমত খোঁজ-খবর নিয়ে যাবেন, কেমন ব্যাবস্থা সেখানে এভেইলেবল, নিরাপত্তা কেমন, পরিবেশ কেমন ইত্যাদি। ভ্রমণের সময়কার আবাস সম্পর্কে অনেকের কনসেপ্ট হল, আরে কোন মতে রাত পার করতে পারলেই হল। কিন্তু আমি এটার সম্পূর্ণ বিরোধী। ভ্রমণের আবাস হতে হবে যথাসম্ভব ভালো। সারাদিন দৌড়-ঝাঁপ করে শরীর এবং মনকে বিশ্রাম দিতে ভালো ভ্রমণ আবাসস্থলের বিকল্প নেই।

ভ্রমণ লাগেজ গোছানো (কি কি সাথে নেব?)

ভ্রমণের লাগেজ গোছানোর সময় অনেকেই একগাদা জামাকাপড় দিয়ে ব্যাগ ভরে ফেলেন। আপনি আপনার ভ্রমণ সময়কালীন পুরো শিডিউলটা একবার ভারচুয়ালি ইমাজিন করুণ। ভেবে দেখুন আপনার একান্ত কি কি জামাকাপড় লাগতে পারে? সেগুলোর বাইরে সর্বাধিক একটি কিংবা দুটি জামা বেশী নিতে পারেন। আনুসাঙ্গিক কি কি প্রয়োজন হতে পারে তার একটা লিস্ট করুণ – টুথপিক, কটনবাড, সেফটিপিন থেকে শুরু করে ফার্স্ট এইড বক্স এমন কি সসপ্যান/চা-কফি মেকারও নিতে পারেন। তবে যাই লাগেজে ঢোকান না কেন একটা জিনিশ মনে রাখবেন, এই লাগেজ কিন্তু আপনাকেই বহন করতে হবে।

ভ্রমণের পোশাক (কি ধরনের জামা-কাপড় পরিধান করবো?)

ভ্রমণের স্থান, পরিবেশ এবং সংস্কৃতি মাথায় রাখা উচিত পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে। আপনি কোনও তীর্থস্থানে যে পোশাক পরে যাবেন সেই একই পোশাক পরে পাহাড়ে ট্রেকিং করতে পারবেন না। তাই যে এলাকায় বেড়াতে যাবেন সেখানকার স্থানীয় কালচার সাপোর্ট করে এমন পোশাক পরিধান করুন। 

• পোশাকের ফেব্রিক্স একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গ্রীষ্মকালে বা গ্রীষ্মপ্রধান স্থানে ভ্রমণের সময় ১০০% কটন ড্রেস পরিধান করুন, তা ওজনে হালকা এবং লাইট কালারের হলে ভালো হয়। একইভাবে শীতকালে বা শীতপ্রধান স্থানে গাঢ় রঙের মোটা তাপনিরোধক কাপড়ের তৈরি জামা পরিধান করুন। 
• জামার রং অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা আমরা ভ্রমণে বের হবার সময় লক্ষ্য রাখিনা। পাহাড় বা বনাঞ্চলে ভ্রমণের সময় অবশ্যই উজ্জ্বল কোন রঙের জামা পরিধান করা উচিত নয়। প্রচুর হাঁটতে হবে এমন ট্যুরে সাদা রঙের জামাই শ্রেয়। 
• ভ্রমণের সময় যতসম্ভব প্রয়োজনের চেয়ে বেশী জামা নেয়া উচিত নয়। কারন, আপনার জামা কাপড়ের কারনে আপনার লাগেজ বা ব্যাকপ্যাক ভারী হয়ে গেলে তা আপনার জন্যই সমস্যার কারন হয়ে দাঁড়াবে। আমার ব্যাক্তিগত অভিমত পারলে এক জামাতেই ভ্রমণ শেষ করা, যদিনা তা দুইদিনের বেশী হয়। 
• ভ্রমণের সময় আঁটসাঁট জামা পরিধান করা উচিত নয়, যতটা ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করা যায় ততই ভাল, কেননা ভ্রমণের জামা কমফোর্টেবল হওয়া জরুরী। 
• ভ্রমণের পোশাক অবশ্যই এমন হতে হবে যেন তাপনিরোধক হয়, পোকামাকড় যেন আকৃষ্ট না হয়, দ্রুত পানি শুকিয়ে যায়, ক্ষতিকর রশ্মি নিরোধক হয়। 
• জামার পকেট থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শার্টের পকেটে টিকেট, সানগ্লাস, অন্যান্য ছোটখাটো জিনিস রাখা যায়; টাকা-পয়সা, মূল্যবান ও জরুরী কাগজপত্র, যেমন পাসপোর্ট, এগুলো প্যান্টের পকেটে; সাইড পকেট বা মোবাইল পকেটে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় টুলস রাখা যায়। তাই পকেটযুক্ত জামা সিলেক্ট করুন ভ্রমণের সময়। 
• ভ্রমণের সময় মোজা, কাপড়ের টুপি/ হ্যাট, রুমাল, গামছা এগুলোর প্রতি অনেকেই গুরুত্ব দেই না। এগুলো অবশ্যই কটন, তাপনিরোধক, দ্রুত পানি শুকোয় এমন হওয়া উচিত। 
• ভ্রমণের প্রতিটি জামা আলাদা আলাদা পলিপ্যাকে করে লাগেজ/ব্যাগপ্যাকে ভরা উচিত। 

সর্বোপরি প্রতিটি জামা সিলেক্ট করার সময় ট্যুরের ধরণ, স্থান-পরিবেশ-লোকজ রীতিনীতি, আপনার স্বাচ্ছন্দ্য ইত্যাদি মাথায় রাখুন। এমন কোন জামা ভ্রমণে পরিধান করা উচিত নয় যা আপনার ভ্রমণে কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। 

ভ্রমণের খাদ্য (কি কি খাওয়া উচিত?)

ভ্রমণের খাবার-দাবারের ব্যাপারে প্রথমে যে জিনিশটি সকলের মাথায় রাখা উচিত তা হল হাইজেনিক ফ্যাক্টর। আপনি যে খাবারটি খাচ্ছেন তা স্বাস্থ্যসম্মত কি না তা যাচাই করে নেয়া উচিত। প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোড়কজাত খাবার কেনার বেলায় এক্সপায়ার ডেটের ব্যাপারে লক্ষ্য রাখবেন এবং সাথে অবশ্যই মেনুফেচার। 

• ভ্রমণের সময় সেদ্ধ এবং গরম খাবার খাওয়া উচিত। এতে হাইজেননেস এবং হজম উভয়েরই সুরক্ষা হয়। 
• ভ্রমণে একবারে বেশী করে খাবার না গ্রহণ করাই উচিত কারণ পুরো ভুঁড়িভোজন শরীরে আলস্য নিয়ে আসে যা ভ্রমণে একান্তই কাম্য নয়। 
• প্রথমেই আসি সকালের নাস্তার কথায়। সকালের নাস্তা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। তাই সকালের নাস্তা ভালো হওয়া চাই, কেননা সকালের নাস্তা আপনার সারাদিনের ভ্রমণে শক্তি যোগাবে। সকালের নাস্তায় আঁশযুক্ত এবং শর্করাসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। সাথে লো-ফ্যাট দধি, ফলজাতীয় খাবার, সিদ্ধ ডিম (অমলেট, মামলেট অবশ্যই নয়), হালকা মিষ্টি চা-কফি থাকতে পারে। তবে সবচেয়ে বেটার পানীয় হল পানি। তবে পানি পানের সময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। 
• লোকাল রেস্টুরেন্টে নাস্তা করলে অবশ্যই সেঁকা আটা/ময়দার রুটি সাথে সবজি ভাজি বেটার অপশন। রুটি না পাওয়া গেলে তেল ছাড়া পরাটা খেতে পারেন। রেস্টুরেন্ট না থাকলে সেদ্ধ ডিম, কলা, টোষ্ট হতে পারে বেটার চয়েস। 
• লাঞ্চে আমরা ভারী খাবার খেতে অভ্যস্ত। তাই খাবার হওয়া উচিত কম মশলাদার, তেল পরিমিত রান্না করা, সহজে পরিপাক হয় এমন। এক্ষেত্রে ভাঁজা-পোড়া মেন্যু এভয়ড করাই শ্রেয়। উপযুক্ত সেদ্ধ সবজি, মাছ হতে পারে আদর্শ লাঞ্চ মেন্যু। সাথে সালাদ থাকলে ভালো হয়। তবে যেখানেই খাবার খাবেন সবসময় হাইজিন ফ্যাক্টর মাথায় রাখবেন। 
• ভ্রমণের খাবারে রেড মিট যতটা সম্ভব এভয়ড করুন। পোলাও জাতীয় খাবারের বেলায়ও একই কথা বলব। 
• সারাদিনের ভ্রমণে বের হলে লাঞ্চ কখন করবেন সে অনুযায়ী লোকেশন প্রেডিকশন করে জেনে নিন লাঞ্চ টাইমে যেখানে থাকবেন সেখানে লাঞ্চ এভেইলেবল কিনা। যদি আগাম জানা সম্ভব না হয় তবে ব্যাকাপ স্নাক্স নিয়ে নিন। তবে এই স্নাক্স খুব লাইট হলে ভালো হয়। কারন লাঞ্চের বিকল্প কখনোই স্নাক্স হওয়া উচিত নয়। 
• দুপুরের খাবারের সাথে সাথে লম্বা জার্নিতে না বের হয়ে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে একটা চা-বিরতি নেন, তার পর যাত্রা আরম্ভ করেন। 
• রাতের খাবারের মেন্যুতে যে জিনিসটি মাথায় রাখা উচিত তা হল আপনার ব্যাক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্যবোধ। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে দেহকে রিচার্জ করতে রাতের খাবার হওয়া উচিত উচ্চ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং সহজপাচ্য। কেননা আপানার হজমের সমস্যার কারনে আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না আপনার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটুক যা আপনার পরবর্তী দিনের ভ্রমণকে নষ্ট করে। 
• রাতের খাবারে স্যুপ জাতীয় খাবার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত। ফলমূল এবং লো-ফ্যাট মিল্ক থাকতে পারে। মেইন কোর্সে ভাত বা আটার রুটি থাকবে কিন্তু পরিমানে তা যেন বেশী না হয়। 
• ভ্রমণের খাবারে ফাস্টফুড আইটেম, বেভারেজ, ফ্লেভারড জুস, চিপস ইত্যাদি এভয়ড করুন। এইসবের পরিবর্তে দেশীয় ফল – পেয়ারা, আমড়া, কলা, বড়ই, আনারস, জাম ইত্যাদি (মৌসুম ভেদে যা যখন এভেইলেবল থাকে) খেতে পারেন। 

সবশেষে আবারো বলব, ভ্রমণের খাবারে যা লক্ষ্য রাখবেন – হেলথ এন্ড হাইজিন ফ্যাক্টর, তেল-মশলা কম, সহজপাচ্য, পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ।

ভ্রমণের পানীয় (কি কি পান করা উচিত?)

ভ্রমণের পানীয় বিষয়ক কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা আপনি মানলে আশা করি উপকৃত হবেন। 
• পানি ব্যাতিত অন্য কোন পানীয়র ব্যাপারে প্রাধান্য দেয়া উচিত চা, কফি অথবা গরম অন্য কোন পানীয় যা ফুটানো হয়েছে। 
• বোতল অথবা মোড়কজাত পানীয় বা তরল কিছুর ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে; যেমনঃ বোতলটির ছিপি ইন্টেকট কিনা এবং তা যেন অবশ্যই আপনার সামনে খোলা হয়। এবং দেখে নেবেন বোতলের গায়ে উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ, মূল্য ইত্যাদি দেয়া আছে কি না। 
• বোতলজাত পানি যে সবসময় স্বাস্থ্যকর এরকম ভাবার কোন কারন নেই। তাই রেপুটেটেড ম্যানুফ্যাকচারার ছাড়া অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের পানি পান না করাই উত্তম। 
• আমাদের দেশে ফিল্টার পানি বলে যে জারের পানি বিক্রি করা হয় তার শতকরা ৯০ ভাগই আপনার দেহের জন্য ক্ষতিকর; তাই যতটা সম্ভব এই পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। 
• ভ্রমণের সময় আপনার ব্যাকপ্যাকে সবসময় একটি ২/১ অথবা ১ লিটারের পানির বোতল রাখুন। এই বোতলের পানি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়া উত্তম যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি পরবর্তী কোন নিরাপদ পানির সন্ধান পান। এই জন্য যখনই কোন নিরাপদ পানি পাওয়া যাবে, আপনার বোতলটি তখনি ভরে নিন। 
• নিরাপদ পানি পাওয়া না গেলে আপনি হ্যালোট্যাব ব্যাবহার করুন। এ ক্ষেত্রে যে স্থানে রাত্রিযাপন করবেন সেখানে একটি বড় পাত্রে প্রয়োজনমাফিক হ্যালোট্যাব দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করে নিন; সেখান হতে মুভ করার সময় বোতলে পানি ভরে নিন। 
• পানির বিকল্প হিসেবে ডাবের পানি ব্যাবহার করতে পারেন; যদি তা এভেইলেবল হয়। তা ছাড়া রসালো লোকাল ফল ট্রাই করতে পারেন। 
• বাহিরের কোন পানীয় পান করার সময় যে কোন গ্লাস ব্যাবহার না করাই ভালো। প্রয়োজনে বোতলজাত পানীয় বোতলেই পান করুন। অতি সাবধানতার জন্য ভালো ফুডগ্রেড প্লাস্টিকের গ্লাস এবং কাপ আপনার ব্যাকপ্যাকে ক্যারি করুন। 
• হাত-মুখ ধোওয়া, খাবার পাত্র ধোওয়া, ফল জাতীয় খাবার ধোওয়া প্রভৃতি কাজে ব্যবহৃত পানির ব্যাপারে আমরা অনেকেই উদাসীন। কিন্তু পান করার পানির মতই এই পানির ব্যাপারেও সমান গুরুত্ব দেয়া উচিত। 
• আমরা অনেকেই গ্রামাঞ্চলে ভ্রমণের সময় টিউবওয়েলের পানির উপর অগাধ বিশ্বাস রেখে পান করে থাকি। কিন্তু টিউবওয়েলের পানি সবসময় বিশুদ্ধ ভাবার কোন কারণ নেই। তাই টিউবওয়েলের পানি পান করার আগে তা আর্সেনিকমুক্ত কিনা তা যাচাই করে নিন, টিউবওয়েল হতে পানি তুলে কোন পাত্রে রাখা হয়েছে তা দেখে নিন, সেখান হতে কোন উপায়ে পানি তোলা হচ্ছে তা জেনে নিন। 

সবশেষে বলব, ভ্রমণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন, অল্প পরিমানে কিন্তু ঘনঘন পানি পান করুন।

তো আর কি? বেড়িয়ে পড়ুন এই ঈদে, নিজের প্রিয় পছন্দের কোন গন্তব্যের উদ্দশ্যে। হ্যাপি ট্র্যাভেলিং।

Translate

বোকা পর্যটকের কথা

মানুষ যেমন হঠাৎ করেই কারো প্রেমে পড়ে, ঠিক তেমনই করে আমিও প্রেমে পড়েছি ভ্রমণের। আজব এক নেশায় নেশাগ্রস্থ, কবে থেকে জানি না। তবে নিজের আর্থ-সামাজিক অবস্থানে লড়াই করে টিকে থাকার পর ভ্রমণে মনঃসংযোগ করতে উদ্যত হই। সেই থেকে যখনই সময়-সুযোগ হয় বেড়িয়ে পড়ি ঘর হতে, ভ্রমণের তরে। মজার ব্যাপার হল, আমি সাইক্লিস্ট নই, সাঁতার কাটতে পারি না, না পারি ট্র্যাকিং, হাইকিং, ক্লাইম্বিং। কোন ধরণের এডভেঞ্চারধর্মী কোন গুণই আমার নেই, শুধু আছে ভ্রমণের শখ আর অদম্য ইচ্ছাটুকু। আর সেই ইচ্ছা থেকেই সময় সময় আমার ঘুরে বেড়ানো আর সেই গল্পগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখা এই ডায়েরীতে। আমার এই লেখাগুলো বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এবং ব্যক্তিগত ডায়েরীতে লেখা ছিল; সেগুলো সব একত্রে সংরক্ষণ করে রাখার নিমিত্তেই এই ব্লগ। যদি আপনাদের কারো এই লেখাগুলো কোন কাজে লাগে তবে আমার পরিশ্রম কিছুটা হলেও সার্থক হবে।

পোস্ট সংরক্ষণাগার

যোগাযোগ ফর্ম

প্রেরণ