এবার চলুন কম খরচে ঘুরে আসি সিমলা...

সিমলা, শিমলা, হিমাচল, সিমলা ভ্রমণ, শিমলা ভ্রমণ, শিমলা ট্যুর, হিমাচল ট্যুর, কম খরচে শিমলা, কম খরচে শিমলা ভ্রমণ, কম খরচে সিমলা, কম খরচে সিমলা ভ্রমণ,জাখু পাহাড়,জাখু মন্দির,জাখু হিল,সামার হিল,দ্যা রিজ্‌ সিমলা,সিমলা মল রোড,সিমলা ক্রাইস্ট চার্চ,সেন্ট মাইকেল ক্যাথিড্রাল সিমলা,গেইটি থিয়েটার,তত্তপানি,কোটগড় সিমলা,কুফরি,ফাগু,Shimla,Shimla Tour,Shimla Tour Guide,Shimla Budget Tour,Shimla Tour Plan,Shimla Travel, Shimla Travel Guide,Shimla Budget Travel,Shimla Travel Plan,Simla,Simla Tour,Simla Tour Guide,Simla Budget Tour,Simla Tour Plan,Simla Travel, Simla Travel Guide,Simla Budget Travel,Simla Travel Plan,kufri,kufri tour,kufri tour guide,kufri tour plan,kufri budget tour,kufri Travel,kufri Travel guide,kufri Travel plan,kufri budget Travel,fagu,fagu tour,fagu tour guide,fagu tour plan,fagu budget tour,fagu Travel,fagu Travel guide,fagu Travel plan,fagu budget Travel,সিমলা, শিমলা, হিমাচল, সিমলা ভ্রমণ, শিমলা ভ্রমণ, শিমলা ট্যুর, হিমাচল ট্যুর, কম খরচে শিমলা, কম খরচে শিমলা ভ্রমণ, কম খরচে সিমলা, কম খরচে সিমলা ভ্রমণ, Shimla Tour, Shimla Tour Guide,সিমলা, শিমলা, হিমাচল, সিমলা ভ্রমণ, শিমলা ভ্রমণ, শিমলা ট্যুর, হিমাচল ট্যুর, কম খরচে শিমলা, কম খরচে শিমলা ভ্রমণ, কম খরচে সিমলা, কম খরচে সিমলা ভ্রমণ,জাখু পাহাড়,জাখু মন্দির,জাখু হিল,সামার হিল,দ্যা রিজ্‌ সিমলা,সিমলা মল রোড,সিমলা ক্রাইস্ট চার্চ,সেন্ট মাইকেল ক্যাথিড্রাল সিমলা,গেইটি থিয়েটার,তত্তপানি,কোটগড় সিমলা,কুফরি,ফাগু,Shimla,Shimla Tour,Shimla Tour Guide,Shimla Budget Tour,Shimla Tour Plan,Shimla Travel, Shimla Travel Guide,Shimla Budget Travel,Shimla Travel Plan,Simla,Simla Tour,Simla Tour Guide,Simla Budget Tour,Simla Tour Plan,Simla Travel, Simla Travel Guide,Simla Budget Travel,Simla Travel Plan,kufri,kufri tour,kufri tour guide,kufri tour plan,kufri budget tour,kufri Travel,kufri Travel guide,kufri Travel plan,kufri budget Travel,fagu,fagu tour,fagu tour guide,fagu tour plan,fagu budget tour,fagu Travel,fagu Travel guide,fagu Travel plan,fagu budget Travel,

আসুন এবার ঘুরে আসি সিমলা থেকে। সিমলা উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশের রাজধানী। উত্তরে মান্ডি এবং কুল্লু জেলা, পূর্বে কিন্নুর, দক্ষিণ-পশ্চিমে উত্তরখান্ড এবং সোলান-সিমুর জেলা দ্বারা পরিবেষ্টিত। ইংরেজ শাসনামলে সিমলাকে গ্রীষ্মকালীন রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়, সময়টা ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দ। ১৮৭১ সাল থেকে সিমলা পাঞ্জাবের রাজধানী ছিল, পরে ১৯৭১ সালে হিমাচলের রাজধানী হিসেবে ঘোষিত হয়। মাত্র দুই লক্ষ লোকের আবাস এই সিমলায়, যা ভারতের সবচেয়ে কম জনসংখ্যার প্রাদেশিক রাজধানীও বটে। 

কিভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে প্রথমেই কলকাতা। এটা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই, কমবেশী সবাই জানেন। আগের দুটি ভ্রমন পরিকল্পনা পোস্টে এটা নিয়ে বিস্তারিত বলা আছে। ৭০০-৬,০০০ টাকার মধ্যে বাই রোড, বাই ট্রেন অথবা বাই এয়ারে নানানভাবে আপনি পৌঁছে যেতে পারবেন কলকাতা। এরপর কলকাতা থেকে যেতে হবে কলকা। কলকাতা থেকে কলকা যাওয়ার ট্রেনটি হল কলকা মেইল (ট্রেন নাম্বার ১২৩১১), হাওরা থেকে রাত ০৭:৪০ এ ছেড়ে গিয়ে তৃতীয় দিন সকাল ০৪:৩০ নাগাদ কলকা পৌঁছে। স্লিপার ক্লাস ৬৮০ রুপী, এসি থ্রি-টায়ার ১৮৫০ রুপী, এসি টু-টায়ার ২৭০০ রুপী এবং এসি ফার্স্টক্লাস ৪৮০০ রুপী (প্রায়)। কলকা পৌঁছে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সেরে নিয়ে টয় ট্রেনের টিকেট করুন, ভাল হয় আগে থেকে করে রাখতে পারলে। কলকা থেকে মোট পাঁচটি টয়ট্রেন ছেড়ে যায় সিমলা’র উদ্দেশ্যে। এগুলো হলঃ  

(১) Kalka Shimla NG Passengers (Train No. 52457) Dep: 04:00 Arrv: 09:20

(২) Kalka Shimla Rail Motor (Tran No. 72451) Dep: 05:10 Arrv: 09:50

(৩) Shivalik Delux Express (Train No. 52451) Dep: 05:30 Arrv: 10:15 

(৪) Kalka Shimla NG Express (Train No. 52453) Dep: 06:00 Arrv: 11:05 

(৫) Himalyan Queen (Train No. 52455) Dep: 12:10 Arrv: 17:20 

ভাড়া অসংরক্ষিত দ্বিতীয় শ্রেনী ১০০ রুপী’র মধ্যে আর প্রথম শ্রেনী ২৫০-৩৫০ রুপী’র মধ্যে।  উল্লেখ্য যে, টয় ট্রেন যা ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি থেকে সিমলাকে, কালকা শহরটির সঙ্গে সংযুক্ত  রেখেছে এবং শহরটিতে পৌঁছানোর জন্য সবচেয়ে অন্যতম জনপ্রিয় রাস্তা তবে এটি খুবই ধীর। তবে, পারিপার্শ্বিক দৃশ্য পরিদর্শনের জন্য যে কারোও কাছে এই 96 কিলোমিটার দীর্ঘ ট্র্যাকটি খুবই সুন্দর। রাস্তা বরাবর, ভ্রমণার্থীরা চারপাশের অঞ্চলের এক অত্যাশ্চর্য দৃ্শ্য পরিদর্শন করতে পায়। রেলটি 103-টি সুড়ঙ্গপথ ও 806-টি সেতুর মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করে।

এছাড়া কলকাতা থেকে দিল্লী হয়ে বাই রোডে সিমলা আসা যায়। HPTDC এর বাস ভাড়া এসি ভলভো ৯০০ রুপী আর নন-এসি ভলভো ৫৫০ রুপী। আরও বেশ কিছু বেসরকারী বাস এই রুটে চলাচল করে, ভাড়া ৮০০-১৫০০ রুপীর মধ্যে (বাস)। আপনি চাইলে ট্যাক্সি অথবা প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে আসতে পারেন সিমলা, খরচ পড়বে  ৬,০০০ রুপী থেকে শুরু কর গাড়ীর ধরন এবং ধারন ক্ষমতার উপর।

সিমলা রেলষ্টেশন থেকে মল রোড মাত্র এক কিলোমিটার মত দূরত্বে অবস্থিত। তাই সিমলা পৌঁছে রেলস্টেশনে হালকা চা-নাস্তা সেরে নিয়ে সিমলা শহর দেখতে দেখতে চলে আসুন মল রোড। 

কোথায় থাকবেনঃ মল রোডে এসে নিজের পছন্দ মত একটা হোটেল খুঁজে নিয়ে উঠে পড়ুন। ভাড়া ৫০০ রুপী থেকে শুরু, তবে পিক সিজন শীতে ভাড়া একটু বেশি থাকে। এভারেজ বাজেট ১,০০০ রুপী থেকে ধরে রাখতে পারেন। চাইলে আগে থেকে অনলাইনে বুকিং দিয়ে রাখতে পারেন। এজন্য ঢুঁ মারুন booking.com, agoda, makemytrip এসব সাইটে।   

কি কি দেখবঃ 

জাখু পাহাড় ও জাখু মন্দির: জাখু পাহাড় হল সিমলার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এবং পারিপার্শ্বিক ভূ-প্রকৃতির এক অত্যাশ্চর্য নিদারুণ দৃ্শ্য পরিদর্শনেরও প্রস্তাব দেয়। পাহাড়ের চূড়ায় স্থিত জাখু মন্দির প্রভু হনুমানের প্রতি উৎসর্গীকৃত। স্থানীয় কিংবদন্তিদের অনুমান অনুযায়ী, সঞ্জীবনী ঔষধি বিদ্যমান এই পাহাড়টিকে তুলে নিয়ে আসার সময় প্রভু  হনুমান এখানে বিশ্রাম নিয়েছিলেন। এর ফলস্বরূপ, এই স্থানটি একইভাবে ভক্ত এবং ভ্রমণকারীদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।  ভ্যাইসরিগেল লজ: অবসারভেটারী পাহাড়ের উপর অবস্থিত ভ্যাইসরিগেল লজ। 1898 সালে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি ভারতের ভাইসরয়, লর্ড ডাফরিনের সরকারি বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হত। বর্তমানে এই স্থানটি হল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ আ্যডভান্স স্টাডিজ। লজটি শুধুমাত্র ভারতে ব্রিটিশ শাসনের মধ্যে একটি অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে না, বরঞ্চ সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের এক অত্যাশ্চর্য দৃ্শ্য পরিদর্শনেরও প্রস্তাব দেয়।

সামার হিল: বাণিজ্যিক সিমলার শশব্যস্ততা থেকে দূরে কোনও স্থান অন্বেষণকারী পর্যটকদের মধ্যে সামার হিল হল খুবই জনপ্রিয়। এর পথের চারপাশে ওক, সেডার, রডোডেনড্রন এবং আরোও অনেক গাছপালা বেড়ে উঠেছে। এখানে অবস্থিত ম্যানরভিল্যে ম্যানশন হল এই এলাকার সবচেয়ে বিখ্যাত ভবন, কারণ এটিই সেই জায়গা যেখানে মহাত্মা গান্ধী সিমলা ভ্রমণের সময় ছিলেন। 

দ্যা রিজ্: এটি একটি উন্মুক্ত স্থান, যেটি সিমলার সবচেয়ে বেশি কার্যকলাপ কেন্দ্র রূপে পরিচিত। দ্যা রিজ্ বা শৈলশ্রেণীতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক আছে এবং বেশ কিছু কার্যক্রম আয়োজনের পাশাপাশি এখান থেকে পার্শ্ববর্তী পর্বতগুলির এক সুন্দর দৃশ্য পরির্শনেরও প্রস্তাব দেয়। শহরের এই অংশটি সিমলার জনজীবনের জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটির নীচের জলাশয় শহরের একটি প্রধান অংশে জল সরবরাহের দায়ভারে রয়েছে।  

মল্ রোড: সিমলার বিপূল সংখ্যক ল্যান্ডমার্ক এখানে অবস্থিত হওয়ায়, মল রোড পর্যটকদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। এছাড়াও এখানে বেশ কিছু রেস্তোঁরা, ক্লাব, বার ও দোকান অবস্থিত হওয়ায় এটি সিমলার বাণিজ্যিক  কেন্দ্রস্থল হিসাবেও বিবেচিত হয়। যেকোনও ক্রেতাদের জন্য মল রোড স্বর্গোদ্যানের ন্যায়।  

ক্রাইস্ট চার্চ: এটি 1844 সালে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি উত্তর ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম গির্জা। ক্রাইস্ট চার্চটি রিজ্-এ অবস্থিত এবং এটি তার এলিজাবেথীয় স্থাপত্য ও তার নকশায়িত কাঁচের জানলার জন্য পর্যটকদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। এছাড়াও গির্জাটিতে একটি পাইপ অর্গান রয়েছে, যেটি দেশের সবচেয়ে এক অন্যতম বৃহৎ হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি তাদের জন্যই আদর্শ যারা আধ্যাত্মিকতার সাথে সাথে ইতিহাসের এক নিদর্শনকে খুঁজে চলেছে। 

সেন্ট মাইকেল ক্যাথিড্রাল: সেন্ট মাইকেল চার্চ 1850 সালে নির্মিত হয়েছিল। এটা সিমলার প্রথম ক্যাথলিক গির্জা। এটিতে পাঁচটি মার্বেলের বেদী আছে যেগুলি 1855 সালে ইতালি থেকে আনা হয়েছিল। এছাড়াও  গির্জাটিতে সুন্দর নকশায়িত কাঁচের জানলা রয়েছে, যেগুলি চোখদুটিকে উচ্ছাসিত করে তোলে। 

গেইটি থিয়েটার: এই থিয়েটার বা নাট্যমঞ্চটি, সিমলায় ব্রিটিশ বাসিন্দাদের বিনোদনের সুযোগ প্রদানের জন্য 1887 সালে নির্মিত হয়েছিল। ভবনটির নব্য-গোথিক  স্থাপত্য লালিত নেত্রের জন্য এক সুন্দর দৃশ্য। এখানে একটি প্রদর্শনী সভা, একটি আ্যম্ফিথিয়েটার ও অন্যান্য বহু সুযোগ-সুবিধা সহ একটি শৈল্পিক গ্যালারি রয়েছে।  যেকোনও সূক্ষ শিল্পপ্রেমীদের জন্য এটি একটি অবশ্যই দর্শনীয় স্থান। 

তত্তপানি: সিমলা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে তত্তপানি-তে অবস্থিত সালফিউরাস উষ্ণ প্রসবণ অনেকের মতে  ভেষজ উপকারিতা হিসাবে বিবেচিত হয় এবং সেই কারণেই চিকিৎসক পর্যটকদের জন্য তত্তপানি একটি খুবই জনপ্রিয় স্থান। উষ্ণ প্রসবণের পাশাপাশি, শতদ্রু নদীর ঠান্ডা জল রিভার র্যাফটিং-এর সুযোগ প্রদান করে।

কোটগড়: কোটগড়, সিমলা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে, প্রাচীন হিন্দুস্তান-তিব্বত সড়কের উপর অবস্থিত এবং এটি আপেল বাগানের জন্যও প্রসিদ্ধ। এটি এমন একটি স্থান যেখানে 1914 সালে হিমাচল প্রদেশের মধ্যে সর্বপ্রথম বাণিজ্যিক ফলের বাগান স্থাপিত হয়েছিল। পরবর্তীকালে, কোটগড় প্রকৃতপক্ষে হিমাচল প্রদেশের এক অন্যতম প্রধান আপেল রপ্তানীকারক স্থান হয়ে ওঠে। 

সিমলা জল-অববাহিকা অভয়ারণ্য: 10.25 বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই অভয়ারণ্যটি সরলবর্গীয় অরণ্য, খাড়াই ভূখণ্ড এবং ক্ষু্দ্র প্রবাহের গৃহস্থল। সিমলার 12 কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এই স্থানটি হল  বাদামী ভালুক, কৃষ্ণকায় হরিণ, ভারতীয় লাল শেয়াল ও ডোরা-কাটা হায়নার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।  

কুফরিঃ কুফরি হিমাচল প্রদেশের সিমলা জেলার একটি ছোট্ট হিল ষ্টেশন। সিমলা শহর থেকে ন্যাশনাল হাইওয়ে ২২ এর দিকে ১৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই শহরটি। ‘কুফরি’ শব্দটি স্থানীয় শব্দ ‘কুফ্র’ থেকে  এসেছে, যার অর্থ ‘লেক’। এখানে রয়েছে ‘হিমালায়ান ওয়াইল্ড লাইফ জু’। মজার ব্যাপার ১৮১৯ সালের আগে এই এলাকা মানুষের অজানা ছিল, মাত্র দুইশত বছর আগেও!!! একদল ইংরেজ পর্যটক বনের ভেতর দিয়ে ট্র্যাভেল করতে গিয়ে আবিস্কার করেন এই অপার সৌন্দর্যের জায়গাটি। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে হিমাচল ট্যুরিজম এর  উদ্যোগে এখানে উইন্টার স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয় যেখানে দেশ বিদেশ হতে হাজারো পর্যটক ভিড় করে।

ফাগুঃ ফাগু কুফরি থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে প্রায় ২৫০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। ফাগু শীতে স্কিয়িং আর উইন্টার স্পোর্টস এর জন্য দেশ-বিদেশ এর পর্যটকদের কাছে এবং গ্রীষ্মে স্থানীয়দের জন্য পিকনিক স্পট হিসেবে খুব জনপ্রিয়। এখানকার চুড়ো থেকে ‘গিরি উপত্যকা’র অসাম ভিউ দেখতে পাওয়া যায়।


সাইট সিয়িং ভ্রমণ পরিকল্পনা (কিভাবে দেখবেন)

প্রথম দিন হোটেলে উঠে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিন, লাঞ্চ শেষে শুরু করুন মল রোড দিয়ে, এখান হতে স্ক্যান্ডাল পয়েন্ট হয়ে সিমলার বিখ্যাত রিজ, জাখু টেম্পল, চার্চ এগুলো দেখুন। সূর্যাস্ত উপভোগ করুন রিজ হতে, এরপর মল রোডে স্ট্রীট ফুড চেখে দেখুন, শপিং করতে পারেন চাইলে। এবার হোটেলে ফিরে একটা আরামের ঘুম দিন। দ্বিতীয় দিন সকালে চলে যান কুফরি, ফাগু এগুলো দেখতে। বাজেট ট্র্যাভেলার হলে আপনি হিমাচল প্রদেশ ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (HPTDC) এর নানান প্যাকেজ ট্রান্সপোর্ট অফার আছে, নীচের ছবি হতে বেছে নিয়ে ঘুরে আসুন।  তৃতীয় দিন সকালে আপনি সিমলা হতে বিদায় নিয়ে আপনার পরবর্তী গন্তব্যে চলে যান। হতে পারে সেটা মানালি, দিল্লী অথবা কলকাতা রিটার্ন। 


একটি খসড়া প্ল্যান ও বাজেট (অবশ্যই কম খরচে):

দিন ০০ঃ ঢাকা থেকে রাতের ট্রেনে যশোর অথবা বাসে সরাসরি বেনাপোল। সেখান থেকে দুই দেশের ইমিগ্রেশন শেষে শেয়ার অটো করে বনগাঁও হয়ে ট্রেনে কলকাতা। সেখান হতে রাত ০৭ঃ৪০ এর ট্রেনে করে রওনা হয়ে যান কলকার উদ্দেশ্যে।

দিন ০১ঃ ট্রেনে সারাদিন এবং রাত্রি যাপন।

দিন ০২ঃ ভোরবেলা কলকা পৌঁছে টয় ট্রেনের টিকেট করে কলকা হতে সিমলা চলে আসুন দুপুরের মধ্যে। একটা হোটেলে চেকইন করে বিকেলবেলা ঘুরে বেড়ান রিজ, মল, চার্চ এসব। রাত্রি যাপন সিমলা।

দিন ০৩ঃ ঘুরে আসুন কুফরি, ফাগু এবং পথে পড়বে আরও দুয়েকটি স্পট। রাত্রি যাপন সিমলা।

দিন ০৪ঃ এদিন বাকী কিছু স্পট দেখে নিতে পারেন। করে নিন শপিং। এরপর সিমলা হতে রাতের গাড়ীতে রওনা হয়ে যান দিল্লীর উদ্দেশ্যে।

দিন ০৫ঃ চাইলে দিল্লী ঘুরে দেখার জন্য দুইএকদিন বাড়তি থাকতে পারেন। নইলে এদিন ট্রেন ধরে রওনা হয়ে যান কলকাতার উদ্দেশ্যে।

দিন ০৬ঃ দুপুরের আগে কলকাতা পৌঁছে চলে যান পেট্রাপোল, বর্ডার বিকেলের মধ্যে পারে হয়ে গেলে মধ্য রাতের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে যাবেন আশা করা যায়।


খরচের হিসেবঃ

- বাস ভাড়া (ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা) ২,০০০ টাকা

- ট্রেন ভাড়া (কলকাতা-কলকা-সিমলা এবং দিল্লী-কলকাতা) ২,৫০০ টাকা

- বাস ভাড়া (সিমলা-দিল্লী) ১,০০০ টাকা

- হোটেল ভাড়া (দুই রাত) ১,৫০০ টাকা

- খাবার (০৬ দিন তিন বেলা) ৩,৫০০ টাকা

- সাইট সিয়িং এবং অন্যান্য ২,০০০ টাকা

সর্বমোটঃ ১২,৫০০ টাকা।


সবশেষে আগ্রহীদের জন্য সিমলার সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্তঃ

রাজনৈতিক পটভূমিতে সিমলার রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস।। ১৮১৭ সালে সিমলা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে আসে। এখানকার আবহাওয়া এবং প্রকৃতির রূপে মুগ্ধ হয়ে ব্রিটিশরা এখানে হিমালয় রেঞ্জের বনভূমির নিকটে শহরের পত্তন করে। সিমলা’র অনেকগুলো আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ঘটনার মধ্যে আছেঃ “Simla Accord of 1914”, “the Simla Conference of 1945” এবং “Simla Agreement of 1972”। ২০১১ এর পরিসংখ্যান মতে সিমলা মোট ১৯টি পাহাড়ি অঞ্চল নিয়ে গঠিত, অঞ্চলগুলো হলঃ Baghal, Baghat, Balsan,Bashahr, Bhajji, Bija, Darkoti, Dhami, Jubbal, Keonthal, Kumharsain,Kunihar, Kuthar, Mahlog, Mangal, Nalagarh (Hindur), Sangri and Tharoch। সিমলার বেশীরভাগ অঞ্চল ঘন বনভূমি ছিল এবং একমাত্র জাখো মন্দির এবং তদসংলগ্ন কয়েকটি ঘরবাড়ি ছিল উনিশ শতকের শুরুর দিকে। ১৮০৬ সালে নেপালের ভিসমেন থাপা আজকের সিমলার দখল নেন। পরে ১৮১৪-১৮১৬ সালের দুই দফায় যুদ্ধের পর এর দখল চলে যায় ইংরেজদের হাতে। ১৮১৯ সালে লেঃ রোজ এখানে একটি কাঠের কটেজ নির্মাণ করেন। তিন বছর পর প্রথম পাকা দালান গড়ে ওঠে ১৮২২ সালে। ১৮২৫-১৮৩০ সালের দিকে বিভিন্ন ব্রিটিশ প্রশাসক এবং কর্মচারীরা ছুটি কাটাতে সিমলা আসেন এবং এর  আবহাওয়া-প্রকৃতিতে মুগ্ধ হয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট করেন যার প্রেক্ষিতে ১৮৩০ সালে এখানে বসত গড়ার উদ্যোগ নেয় ব্রিটিশ রাজ। ১৮৩২ সালে গভর্নর জেনারেল উইলিয়াম বেণ্টিক এবং তৎকালীন মহারাজা রণজিৎ সিং এর মধ্যে একটি রাজনৈতিক সভা হয় এই প্রেক্ষিতে। ১৮৪৪ সালে সিমলার বিখ্যাত চার্চটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।  সিমলা পূর্বে দুটি খণ্ডে বিভক্ত ছিল, ছোট সিমলা এবং মূল সিমলা। ১৮৫০ সালে দুই সিমলার মাঝে সেতু নির্মিত হয়ে সংযোগ স্থাপিত হয়্য। ১৮৮১ সালের তথ্য মতে সিমলায় প্রায় দুই হাজার বসত বাড়ী ছিল। ১৯০৫ সালে  বিখ্যাত অকল্যান্ড টানেল এবং তার পরের বছর কলকা-সিমলা'র টয়ট্রেন খ্যাত রেল লাইন নির্মিত হয়; যা ২০০৮ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব হেরিটেজ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ভৌগলিক দিক দিয়ে সিমলার উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাড়ে সাত হাজার ফিট এবং দৈর্ঘে পূর্ব-পশ্চিমে নয় কিলোমিটার বিস্তৃত। সিমলার সবচেয়ে উঁচু স্থান জাখু হিল  যেখানে জাখু মন্দির অবস্থিত, উচ্চতা আট হাজার ফিটের একটু বেশী।

মন্তব্যসমূহ

Translate

বোকা পর্যটকের কথা

মানুষ যেমন হঠাৎ করেই কারো প্রেমে পড়ে, ঠিক তেমনই করে আমিও প্রেমে পড়েছি ভ্রমণের। আজব এক নেশায় নেশাগ্রস্থ, কবে থেকে জানি না। তবে নিজের আর্থ-সামাজিক অবস্থানে লড়াই করে টিকে থাকার পর ভ্রমণে মনঃসংযোগ করতে উদ্যত হই। সেই থেকে যখনই সময়-সুযোগ হয় বেড়িয়ে পড়ি ঘর হতে, ভ্রমণের তরে। মজার ব্যাপার হল, আমি সাইক্লিস্ট নই, সাঁতার কাটতে পারি না, না পারি ট্র্যাকিং, হাইকিং, ক্লাইম্বিং। কোন ধরণের এডভেঞ্চারধর্মী কোন গুণই আমার নেই, শুধু আছে ভ্রমণের শখ আর অদম্য ইচ্ছাটুকু। আর সেই ইচ্ছা থেকেই সময় সময় আমার ঘুরে বেড়ানো আর সেই গল্পগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখা এই ডায়েরীতে। আমার এই লেখাগুলো বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এবং ব্যক্তিগত ডায়েরীতে লেখা ছিল; সেগুলো সব একত্রে সংরক্ষণ করে রাখার নিমিত্তেই এই ব্লগ। যদি আপনাদের কারো এই লেখাগুলো কোন কাজে লাগে তবে আমার পরিশ্রম কিছুটা হলেও সার্থক হবে।

পোস্ট সংরক্ষণাগার

যোগাযোগ ফর্ম

প্রেরণ