একটি বিনোদন স্থাপনা যদি কোন বাস টার্মিনালে নির্মিত হয়ে তবে তার করুন পরিণতি বলার বাইরে। এর জীবন্ত প্রমাণ চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল সংলগ্ন “জিয়া পার্ক” অথবা “স্বাধীনতা পার্ক” অথবা “মিনি বাংলাদেশ” যে নামেই আপনি অভিহিত করুন একে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে এই বিনোদন পার্কের নামও পরিবর্তিত হয়েছে। এবারের চিটাগং হান্টে আমাদের দ্রষ্টব্য লিস্টে ছিল এই “মিনি বাংলাদেশ” আর তৎসংলগ্ন ঘূর্ণায়মান রেস্তোরা।
সে যুগ আগে চালু হওয়া এই পর্যটন প্রকল্প তখন থেকে দেখার প্রচণ্ড ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সুযোগ ঘটেনি। তাই এবার সুযোগ পেতে পারকি সমুদ্র সৈকত যাওয়ার পথে ঘণ্টা দুয়েক কাটিয়েছিলাম এই পার্কের প্রাঙ্গনে। ঢাকা থেকে যে কেউ রিজার্ভ মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কার নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে রওনা দিয়ে সকালে পারকি বীচ ঘুরে বিকেলে ফেরার পথে এই পার্কে ঘুরে বেড়িয়ে ফের রাতের বেলা ঢাকা ফিরে আসতে পারেন... চমৎকার একটি ডে লং ট্যুর হবে বৈকি!
গোটা বাংলাদেশেরই সম্মিলন রয়েছে এর মধ্যে। অর্থাৎ, ঐতিহাসিক স্থানগুলোর অবিকল নিদর্শন। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার মতো না এমন সব কাজ। মিনি বাংলাদেশে গেলে সবাই অবাক হবেন এই ভেবে যে, আরে কোথায় এলাম। আহসান মঞ্জিল, সংসদ ভবন, কার্জন হল কিংবা কান্তজিউ মন্দির কী করে চট্টগ্রামে চলে এলো! এখানেই কিন্তু শেষ নয়, এর পাশে নবাবী আমলের হাল-হকিকতে বহাল তবিয়তে দাঁড়ানো দরবার হল, সোনা মসজিদ, সেন্ট নিকোলাস চার্চ, বড় কুঠি, ছোট কুঠি, লালবাগ কেল্লা আর জাতীয় শহীদ মিনার।
স্বপ্ন কল্পনার এরকম জাদুবাস্ততা অবস্থিত নগরীর এই পার্কে। দৃষ্টিনন্দন এতসব স্থাপনা একসঙ্গে থাকার পরও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দূরদর্শিতার অভাবে এখানে দিন দিন দর্শনার্থী কমতে শুরু করেছে। দর্শনার্থীদের অন্যতম আকর্ষণ সুউচ্চ রিভলবিং রেস্টুরেন্ট যান্ত্রিক ক্রটির কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে ছিলো, কিন্তু আমরা যেদিন বেড়াতে গেলাম সেদিন চালু ছিলো।
শিশুদের ১১টি রাইডের মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ মনোরেল। যেটি বিশেষ ব্যবস্থায় উপর দিয়ে চালানো হয়। তবে ৬টি মনোরেলের মধ্যে বর্তমানে সচল রয়েছে মাত্র একটি। ৫টি মনোরেল দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। উদ্বোধনের পর থেকে দর্শক বাড়ানোর জন্য এখানে নতুন করে আর কোনো রাইড বাড়ানো হয়নি। পূর্বে যেখানে দৈনিক ২২০০ থেকে ২৫০০ দর্শনার্থী পার্কে বেড়াতে আসত সেখানে তা কমে এখন গড়ে ২০০-তে গিয়ে ঠেকেছে।
নিউজ কার্টেসিঃ
যাই হোক, এই পার্ক বেশী বর্ণনার চেয়ে দেখার, আর তাই পত্রিকার রিপোর্টের অংশ তুলে দিয়ে আসুন চলে যাই সরাসরি ছবিতেঃ