শখের ভ্রমণ - যেন মৃত্যু ফাঁদ না হয়ে দাঁড়ায়

#
# 
"....মোহনায়, নিঝুম দ্বীপ দেখে ফিরছি। তখন চলছিল হুদহুদ এর ৩ নম্বর সিগন্যাল আর প্রথম জোয়ারের সময়। বঙ্গোপসাগর আর মেঘনার মোহনায় আছি আমরা। হঠাৎ দেখি স্রোতের একটা উঁচু সাদা দেয়াল আমাদের দিকে ছুটে আসছে। ভাবলাম, ক্যামেরাকি বের করবো? পর মুহুর্তে মনে হলো আমরা মারা যাচ্ছি। ছবি তুলে আর কি হবে? দলনেতা টুটুল ভাই জোরে জোরে 'ইন্নালিল্লাহে ....রাজেউন ' পড়ছেন। সাথে সবাই পড়ছে । মানিকের আওয়াজ পেলাম, লাইফ জ্যাকেটগুলো কোথায়? তিনটা জ্যাকেট আমার পায়ের নিচে, চেইন আটকানো। মানুষ অনেক আর জ্যাকেট মাত্র তিনটা। ওগুলো আর ধরলাম না। আট-দশ ফুট উঁচু ঢেউ আমাদেরকে নৌকাসহ কাত করে উপরে তুললো, একই সময়ে ঢেউ এর পানি নৌকাতে উঠে গেল। আমরা ডুবে যাচ্ছি। মাঝে মাঝে আমি দুঃস্বপ্ন দেখি- পানির গভীরে ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছি, নেই কোনো অনুভূতি - শুধুই শূন্যতা। সেই শূন্যতাই যেন আমাকে গ্রাস করছে। এরপর আশ্চর্য ঘটনা ঘটলো। আমাদের প্রায় ডুবে যাওয়া নৌকা সোজা হয়ে ভেসে উঠলো। বেঁচে যাওয়ার আনন্দে মিলি তখন কাঁদছে। আমরা বাকশূন্য। মনে হলো, পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটাই সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ঘটনা।...."

উপরের কথাগুলো ভ্রমণবন্ধু আনিস ভাইয়ের। এই গেল কোরবানির ঈদে “ভ্রমন বাংলাদেশ” থেকে ২৪ জনের একটি দল গিয়েছিল ৩দিনের ট্যুরে “নিঝুম দ্বীপ” বেড়াতে, ফেরার দিন সকাল বেলা ঘটে এই ঘটনা। আমি শারীরিক সমস্যার কারনে প্রচণ্ড ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এই ভ্রমণে সঙ্গী হতে পারি নাই, বসেছিলাম বাসায় টিভি’র সামনে আর নইলে ফেবু বা ব্লগে। তো ঈদের চতুর্থদিন সকালে প্রতিটি টিভি চ্যানেলের স্ক্রলে যখন দেখাচ্ছিল “হুদহুদ” এর আগমনী বার্তা, তার সাথে সমুদ্রে দুই নম্বর সতর্ক সংকেত, আমি প্রথমে ফোন দিলাম টুটুল ভাইকে, কিন্তু উনার মোবাইল আউট অফ নেটওয়ার্ক। এরপর ফোন দিলাম তাহসিন মামা আর বন্ধু রবিউল হাসান খান মনা’কে; উনারা তখন ১২ জনের আরেকটা দল নিয়ে সেন্ট মার্টিন। নিউজ তাদের দেয়ার মিনিট পনের পরে জানতে পারলাম নিঝুম দ্বীপের আবহাওয়া চমৎকার রৌদ্রজ্জ্বল, কোন সমস্যা নেই। 

আমার মনটা খচখচ করতে লাগলো। যাই হোক, পরদিন ঘুম থেকে উঠে টিভি ছাড়তেই নিউজ স্ক্রলে দেখি, নিঝুম দ্বীপে ২০০ যাত্রী নিয়ে লঞ্চ/ট্রলার ডুবি। নিউজ দেখে আমার হাত পা ভয়ে জমে গেল। দুরুদুরু বুকে নিঝুম দ্বীপ গ্রুপের কয়েকজনকে ফোন দিলাম, কাউকে ফোনে ধরতে না পেরে ফের তাহসিন আর মনা’কে ফোন দিলাম। আধঘণ্টা পরে জানতে পারলাম, আমাদের গ্রুপের সবাই সহীহ সালামতে আছে, কোন সমস্যা হয় নাই, তারা এখন হাতিয়া হতে ঢাকাগামী লঞ্চে আছে। মনে মনে খুশী হলাম। কিন্তু ঈদের এক সপ্তাহ পেরুনোর পর আনিস ভাইয়ের স্ট্যাটাস, যা দিয়ে লেখা শুরু করেছি, পড়ে জানতে পারি কি ভয়াবহ বিপদ থেকে তারা বেঁচে এসেছে; সেইরকম ওয়েভেই ২০০ যাত্রী বোঝাই ট্রলার/লঞ্চ’টি ডুবেছিল। আল্লাহ্‌র অশেষ রহমত “ভ্রমণ বাংলাদেশ” এর সবাই সুস্থ শরীরে নীড়ে ফিরে এসেছে। 

সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে আরেক ভ্রমণসঙ্গী মেহেদী হাসান বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ..। আল্লাহ হেফাজত করেছেন। আমি তো হাত বাড়িয়ে আমার বউ আর আবদুল্লাহকে (উনার দুই বছর বয়সী ছেলে) জড়ায়ে ধরছিলাম আর লাইফ জ্যাকেটের দিকে দেখছিলাম। ভাবতেছিলাম এই বুঝি ডুবে গেলাম।” 

আসলে লাইফ জ্যাকেট পর্যাপ্ত থাকলেও আমরা বেশীরভাগ সময়ই তা ব্যাবহার করি না। গত বছরের কোরানির ঈদে “কুকরি-মুকরি” ট্যুরে সবার জন্য একটি করে বরাদ্দকৃত লাইফ জ্যাকেট থাকা সত্ত্বেও আমি ছাড়া আর কাউকে লাইফ জ্যাকেট পরিধান করে নৌপথে ভ্রমণ করতে আগ্রহী হতে দেখিনি। পুরো ট্যুরে আমার সবগুলো ছবি, যা নৌপথে ভ্রমনের সময় তোলা, লাইফ জ্যাকেট পরিহিত অবস্থায় ছিল। অনেকে এটা নিয়ে হাসাহাসি করলেও, আমি নৌপথ ভয় পাই। 
#
এবার মূল কথায় আসি, শখের ভ্রমণ যেন আমার আপনার গাফলতিতে মৃত্যুফাঁদ হয়ে না দাঁড়ায়। কয়েকটি ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলি কিছু কথা। ২০১৩ এর শুরুর দিকে, বান্দরবান ট্যুরে নিজেদের সময় নষ্ট করার খেসারত দিয়ে রাতের অন্ধকারে পাহাড়ি পথে তীব্র বৃষ্টি আর মেঘের জালে বন্দী হয়ে কি বিপদে পড়েছিলাম, তা বলে বুঝাতে পারবো না। (পড়তে পারেন এখানেঃ ভয়ঙ্কর সুন্দরীতমা!..বান্দরবান (পরব-১) ) এইতো, গত মে মাসে তিনদিনে তিন জেলা (বান্দরবানের রূপের ছোট্ট বাঁকে (তিন দিনে তিন পার্বত্যজেলা ভ্রমণ ) ভ্রমণের সময়, পানিহীন শুভলং ঝর্ণা দেখতে গিয়ে আমি বসেছিলাম বোটে, গল্প হচ্ছিল মাঝির সাথে। অন্য তিন বন্ধু বোট থেকে নেমে ঝর্নার দিকে এগিয়ে গেল।

বোটের মাঝি কথা প্রসঙ্গে জানালো, মাস কয়েক আগে, কাপ্তাই লেকের ঐ শান্ত জলে বোট উল্টে এক ভ্রমণ যুগল তরুন-তরুণী প্রাণ হারায়। তরুণীটি নৌকার একেবারে শেষপ্রান্তে গিয়ে টাইটানিক পোজ দিয়ে ছবি তোলার সময় ব্যালেন্স হারিয়ে পানিতে পড়ে যায়, তাকে উদ্ধার করতে বোটের চালক দ্রুত ইউটার্ন নিতে গিয়ে পুরো বোট উল্টে যায়, এবং বোটের চালক মাথায় আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারায়। এক ঘণ্টার চুক্তিতে ঘাট থেকে নৌকা ছেড়ে তিনঘণ্টা পরেও ফেরত না আসায়, ঘাট হতে দুইটা বোটে করে কয়েকজন খোঁজ করতে এসে উল্টে যাওয়া বোটের পাশে অচেতন চালককে উদ্ধার করে। ব্যাপক অনুসন্ধানের পর, ঘটনার দুইদিন পর ঐ যুগলের লাশ উদ্ধার হয়। 

এই ঘটনা শুনে যখন মন ভারাক্রান্ত, তখন আমার বাকী তিনসাথী আধঘণ্টা ব্যয় করে ফিরে আসলো। আমি বিরক্ত হয়ে রাগারাগি করে বললাম, এই জলহীন শূন্য শুভলং ঝর্ণা দেখার কি আছে? এর উত্তরে যা শুনলাম, তাতে ভয়ে আমার শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গেল। ভ্রমণসাথী রুমি, শুভলং ঝর্ণা’র চূড়ায় উঠার মানসে সেই পাহাড়ের গা বেয়ে উপরে উঠতে থাকে এবং ফুট ত্রিশেক ওঠার পর আর উঠতে না পেরে নামার উদ্যোগ নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতেই বুঝতে পারে নামা প্রায় অসম্ভব। নামার সময় মধ্যাকর্ষণের টান এবং আপনার শরীরের ভর, এই দুইয়ে মিলে একটা শক্তিশালী নিম্নমুখী বল তৈরি করে যা আপনাকে তীব্রবেগে নীচের দিকে নামিয়ে আনতে চাইবে। এইসময় ব্যালেন্স একটু নড়চড় হলেই ঘটে যাবে দুর্ঘটনা। যাই হোক, রুমির ভাগ্য ভালো ছিল, সে হাতের কাছে ফুট বিশেকের একটা লতাজাতীয় গাছ পেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এই ঘটনার মাস দুয়েক পরে, গত রোজার ঈদে, একইরকম ঘটনায় এই শুভলং ঝর্নাতেই৪০ ফুট উপর থেকে পড়ে গিয়ে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়।
 #আমি একটা জিনিষ লক্ষ্য করেছি, অনেকেই ঝর্ণা দেখতে গিয়ে, ঝর্ণার উপরের অংশে উঠে পতনমুখটা দেখতে আগ্রহী হয়ে উঠেন। শুধুমাত্র এরকম ইচ্ছার কারনে শুভলং, মাধবকুণ্ড, পরীকুণ্ড, রিজুক, সহস্রধারা, সুপ্তধারা প্রভৃতি ঝর্ণায় অনেক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। তাই ঝর্ণা দেখুন, নীচ থেকে; কাছে যাওয়া সম্ভবপর হলে না হয় কাছে গিয়ে ঝর্ণার পানিতে ভিজে আসুন। কিন্তু ঝর্ণার উপরে উঠবেন না প্লিজ। 

ইদানীং ফেসবুক, ব্লগ হয়ে উঠেছে ভ্রমণ তথ্য পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম। তাই অনেকেই কিছু তথ্য যোগার করে দে-ছুট ভ্রমণের নেশায়। একটা ভ্রমণ বিষয়ক লেখায় সব কিছু থাকে না। বিশেষ করে রিস্ক ফ্যাক্টর, ভ্রমণকারীর ফিটনেস লেভেল, নেসেসারি ট্রেনিং ইস্যু, এক্সপেরিয়েন্স রিকয়ারমেণ্ট ইত্যাদি। ফলে “সেফটি” ভুলে গিয়ে বেরিয়ে পড়ে রোমাঞ্চের হাতছানিতে। জাফলং এর যে পিয়াইন নদী গত মার্চ-এপ্রিল মাসেও হেঁটে পার হওয়া গেছে, পর্যটকের মৃত্যুতে বর্ষায় প্রশাসনকে নোটিশ জারি করতে হয়েছে ঐ এলাকায় ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। 

প্রতিবছর বর্ষায় নোটিশ দিয়ে বান্দরবানের থানচি থেকে রেমাক্রি রুটে সকল নৌযান চলাচল এবং পর্যটক যাতায়াত বন্ধ করে দেয়া হয়। কারন ভ্রমণের শখে যেন অমুল্য প্রাণটি খোয়া না যায়। আমাদের অতি উৎসাহী আচরণ, আমাদের প্রাণহানি ঘটায়। এই আগস্ট মাসে বিছানাকান্দিও কলঙ্কিত হল পর্যটকের মৃত্যুতে। 
#
আমার আজকের লেখার মূল উদ্দেশ্য হল, ভ্রমণে যেন সর্বাগ্রে “সেফটি ফ্যাক্টর” মাথায় রাখা হয়। প্রাকৃতিক দৈব ঘটনা বা আমাদের দেশের সড়ক-দুর্ঘটনা মেনে নিয়েই ভ্রমণকারীর ভ্রমণ করতে হয়। এর বাইরের অনেক ঘটনা কিন্তু আমরা এভয়ড করতে পারি একটু সচেতন হলেই। প্রতিকূল বৈরি আবহাওয়ায় ভ্রমণে না যাওয়া, সঠিক নিরাপদ সময়ে সংশ্লিষ্ট এলাকা ভ্রমণ করা, অভিজ্ঞ লোক না নিয়ে, শুধু কিছু তথ্য যোগার করে দুর্গম কোন স্পটের উদ্দেশ্যে না বেরিয়ে পড়া, অতি উৎসাহী হয়ে রিস্কি কিছু না করা ইত্যাদি বিষয়গুলো যেন মাথায় রাখি আমরা। 

মাস ছয়েক আগেই সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রাণ হারান চোরা খাল আর রিপ কারেন্টের ফাঁদে পড়ে যা তখন সকল মিডিয়ায় আলোড়ন তুলেছিল। কক্সবাজারে ইয়াসিনের বাহিনী সর্বক্ষণ সৈকতের নিরাপত্তায় কাজ করে যাচ্ছে। অনেক আগে তাদের সাথে কথা বলে জেনেছিলাম, প্রতিদিন দুটি খুঁটিতে ঝাণ্ডা গেড়ে লাল-সবুজ পতাকা তারা দেখিয়ে যায় যেটার অর্থ বেশীরভাগ পর্যটক জানেনা, আবার জানলেও মানে না। লাল পতাকা ভাটা আর সবুজ পতাকা জোয়ার নির্দেশ করে, এটা সবাই জানি। কিন্তু দুই খুঁটির মধ্যবর্তী অংশ যে নিরাপদ সমুদ্র স্নানের জন্য তা কি জানি? প্রতিদিন লাইফগার্ডেরা সৈকতে চোরাখালের মত বিষয় পরীক্ষা করে এই নিরাপদ স্থানটুকু নির্বাচন করে পর্যটকদের সমুদ্র স্নানের জন্য। আমরা প্রাইভেসি খুঁজতে গিয়ে প্রায় সময়ই একটু বাইরের দিকে সরে যাই, যা বেশীরভাগ দুর্ঘটনার কারন। 

আমি নিজ চোখের সামনে ২০০২ সালে টিউব উল্টে সমুদ্রে ডুবে মানুষ মরতে দেখেছি, ভয়াবহ সেই অভিজ্ঞতা। পাহাড়, সমুদ্র, বন, নদী-হাওর যেখানেই যান না কেন সবসময় নিরাপত্তা অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। কোন বনাঞ্চলেই, স্বীকৃত এবং বৈধ, অভিজ্ঞ গাইড ছাড়া ভ্রমণ করা উচিত নয়। জলাভূমিতে ভ্রমণের সময় অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরিধান করুন। মনে রাখবেন, বিপদের সময় আপনে সময় পাবেন না উহা পরিধানের। অহেতুক সাহস দেখাবেন না পাহাড়ি অঞ্চলে। পরিবহণ নির্বাচনে আরও সতর্ক হোন, ভ্রমণের সময় নির্বাচনে অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন। 

সামনের সময়ে ঈদের মত বড় উৎসবগুলো হবে বর্ষায়, তাই এই পোস্টের মাধ্যমে সবাইকে বলি, সাবধানে ভ্রমণে বের হবেন, সব দিক বিবেচনা করে ভ্রমণের স্থান, পরিবহণ, আবাসন ইত্যাদি নির্বাচন করুন (এই বিষয়ে আমার এই মৌলিক লেখাটি'তে চোখ বুলাতে পারেনঃ ভ্রমণের অষ্টকাহন (একটি ভ্রমণ পরিকল্পনা সহায়িকা'র মেগা পোস্ট - Must Read, Otherwise Something You Missed) ) । আপনার একটা ছোট গাফলতি যেন শখের ভ্রমণকে মৃত্যু ফাঁদে পরিণত না করে। 

শোক এবং উৎসর্গঃ সম্প্রতি নেপালে তুষার ঝরে ৩৯ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে হিমবাহ ধসে বেশ কিছু পর্যটক এবং শেরপা মারা যায় চলতি বছরেই। আমাদের দেশে প্রতি উৎসব বা পর্যটন সিজনে অনেক পর্যটক মারা যাচ্ছে। তাদের সবার স্মরনে এবং তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে এই লেখাটি তাদের স্মৃতিতে উৎসর্গ করছি। “ভ্রমণ” আর “পর্যটন” এর মত নিস্পাপ বিনোদন যেন কোনমতেই প্রাণ সংশয়ের কারন না হয়ে দাঁড়ায় এই প্রত্যাশায়...

Translate

বোকা পর্যটকের কথা

মানুষ যেমন হঠাৎ করেই কারো প্রেমে পড়ে, ঠিক তেমনই করে আমিও প্রেমে পড়েছি ভ্রমণের। আজব এক নেশায় নেশাগ্রস্থ, কবে থেকে জানি না। তবে নিজের আর্থ-সামাজিক অবস্থানে লড়াই করে টিকে থাকার পর ভ্রমণে মনঃসংযোগ করতে উদ্যত হই। সেই থেকে যখনই সময়-সুযোগ হয় বেড়িয়ে পড়ি ঘর হতে, ভ্রমণের তরে। মজার ব্যাপার হল, আমি সাইক্লিস্ট নই, সাঁতার কাটতে পারি না, না পারি ট্র্যাকিং, হাইকিং, ক্লাইম্বিং। কোন ধরণের এডভেঞ্চারধর্মী কোন গুণই আমার নেই, শুধু আছে ভ্রমণের শখ আর অদম্য ইচ্ছাটুকু। আর সেই ইচ্ছা থেকেই সময় সময় আমার ঘুরে বেড়ানো আর সেই গল্পগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখা এই ডায়েরীতে। আমার এই লেখাগুলো বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এবং ব্যক্তিগত ডায়েরীতে লেখা ছিল; সেগুলো সব একত্রে সংরক্ষণ করে রাখার নিমিত্তেই এই ব্লগ। যদি আপনাদের কারো এই লেখাগুলো কোন কাজে লাগে তবে আমার পরিশ্রম কিছুটা হলেও সার্থক হবে।

পোস্ট সংরক্ষণাগার

যোগাযোগ ফর্ম

প্রেরণ