বান্দরবানের রূপের ছোট্ট বাঁকে (তিন দিনে তিন পার্বত্যজেলা ভ্রমণ – শেষ পর্ব)

#

গল্পের ছবিসকল

  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
  • বান্দরবান ট্যুর ২০১৪
বাস ছাড়ার কথা দুইটায়, আড়াইটা পার করে বাস ছাড়লো। রাঙ্গামাটি হতে এবার আমরা যাচ্ছি বান্দারবান। আমাদের এই বাসে বিজিবি’র ১৭জন সদস্য যাত্রী হিসেবে ছিল। তাদের জিজ্ঞাসা করে জানলাম তিনঘণ্টা লাগবে বান্দারবান পৌঁছতে। মনে মনে প্ল্যান করে ফেললাম আজকের সূর্যাস্তটা দেখবো নীলাচলের বেঞ্ছে বসে। বাস ছাড়লো কিন্তু চলতে লাগলো খুবই ধীর গতিতে। এর আগে কখনো তিন পার্বত্যজেলার একটি হতে আরেকটিতে যাই নাই। এবার প্রথমে গেলাম খাগড়াছড়ি, সেখান থেকে রাঙ্গামাটি হয়ে এখন যাচ্ছি বান্দারবান। 
সাধারণত ঢাকা থেকে যে সড়কপথে এই জেলাগুলোতে যাতায়াত করা হয়ে থাকে আন্তঃ জেলা পরিবহন কিন্তু সেই পথে হয় না। বিকল্প আন্তঃপথে এই বাসগুলো চলাচল করে। পাহাড়ি বাক ঘুরে ঘুরে এগিয়ে চলতে লাগলো আমাদের বাস। আর তার সাথে চলল যাত্রী উঠানো আর নামানো। এভাবে ঘণ্টাখানেক চলার পর এক জায়গায় এসে বাস যাত্রা বিরতি দিল! ছোট্ট এই জার্নিতে যাত্রা বিরতি দেখে অবাক হলাম। পরে জানতে পারলাম বাস মালিক সমিতির নির্দেশেই সেখানে গাড়ী থামানো হয়।
প্রায় আধঘণ্টার উপরে সেখানে থেমে থেকে আবার যাত্রা শুরু করল বাস। হেলেদুলে চলতে চলতে একসময় দেখি আকাশের সূর্য কোন ফাঁকে হারিয়েছে পাহাড়ের পেছনে। সন্ধ্যা প্রায় শেষ এমন সময়ে আমরা পৌঁছলাম বান্দারবান শহরে। কি আর করা সেদিনের মত আমার নীলাচলের সূর্যাস্ত মিস। 
বাস হতে নেমে আমরা প্রথমেই পরেরদিনের ঢাকা ফেরার টিকেট করে ফেললাম, কেননা পরেরদিন সবার অফিস আছে। ইউনিক পরিবহণের টিকেট কেটে আমরা বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি রেস্টুরেন্টে চা-নাস্তা খেয়ে নিয়ে হোটেল হিলভিউ এ চেক ইন করলাম। এই ফাঁকে আমি আগামী দিনের নীলগিরি যাওয়ার ট্রান্সপোর্ট এর খোঁজে বের হয়ে গেলাম। বান্দারবাণ হতে সকাল সাড়ে আটটা থেকে থানচিগামী বাস ছাড়ে যেটায় করে আমরা নীলগিরি যেতে পারবো। আর ফেরার উপায় হচ্ছে থানচি হতে দুপুর আড়াইটায় বান্দারবানের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে আসে যা নীলগিরি ক্রস করে বেলা চারটার আশেপাশে কোন একসময়। আমাদের সেই বাস ধরতে হলে আগে থেকে সেখানে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হবে। এতো মহা মুশকিল, তার সাথে আরেক সমস্যা বাসে গেলে চিম্বুক পাহাড়, শৈলপ্রপাত আর পিক সিক্সটি নাইন মিস হবে। এদিকে সবচেয়ে কম ভাড়ায় যে চান্দের গাড়ী রাজী হল তার ভাড়াও চার হাজার টাকা। 
শেষে রাতে মোবাইলে ফোন করে ঐ চান্দের গাড়ীর ড্রাইভারকে হোটেলে ডেকে সিদ্ধান্ত হল চার হাজার টাকায় সে আমাদের প্রথমে নীলগিরি, পিক সিক্সটি নাইন, চিম্বুক, শৈলপ্রপাত দেখিয়ে (সব কয়টা একই রাস্তায় অবস্থিত) দেখিয়ে দুপুরের পরে বান্দারবান শহরে এসে লাঞ্চ সেরে স্বর্ণমন্দির, মেঘলা আর নীলাচল নিয়ে যাবে; ভাড়া চার হাজার টাকা। আমরা মোটে চারজন মানুষ, বুঝিয়ে বলায় ড্রাইভার ভদ্রলোক রাজী হলেন। আমরা বান্দারবান শহরের ‘তাজিন ডং’ রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। আজ আর রাত জাগতে পারলাম না। টানা দুই দিন, দুই রাতের ধকলের কারনে অল্প সময়েই ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেলাম। 
পরদিন সকাল সাতটায় ঐ ‘তাজিন ডং’ রেস্টুরেন্ট সকালের নাশতা সেরে আমরা যাত্রা আরম্ভ করলাম। আমি সামনে ড্রাইভারের পাশের সিটে (ব্যাক পেইনের কারণে আমাকে সবসময় সামনে বসতে হয়, নইলে অনেক কষ্ট হয়) বাকী তিনজন পেছনে হৈ হুল্লোড় করতে করতে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ ধরে ছুটে চলা। পথে শৈলপ্রপাত আর চিম্বুকে না থেমে আমরা গিয়ে থামলাম একেবারে পিক সিক্সটি নাইনে; ঐ দুটো ফেরার পথে দেখার প্ল্যান করলাম। পিক সিক্সটি নাইনে যে সাইনবোর্ডটা রয়েছে ঠিক তার পেছনে উচু টিলাটার উপরে যারা উঠেন নাই তারা অনেক কিছু মিস করেছেন। আর যারা বান্দারবান যান নাই বা পিক সিক্সটি নাইন যান নাই; তাদের জন্য জানিয়ে রাখি পিক সিক্সটি নাইন হচ্ছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্থল পিচঢালা পথ। এর উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে প্রায় ২,২০০ ফুট।
যাই হোক সেখানে আধঘণ্টার মত কাটিয়ে আমরা রওনা হলাম আমাদের মূল গন্তব্য নীলগিরি’র দিকে। আমাদের চারজনের মধ্যে আমি আর রুমি আগেই এগুলো ঘুরে গেছি, তারপরও এবার একই ভ্রমণ বাকী দু’জনের জন্য। ওরা এই প্রথম পার্বত্য এলাকায় বেড়াতে এসেছে। আর কি ভাগ্য! তিন দিনে তিন পার্বত্য জেলা যার মধ্যে রয়েহে সাজেক, নীলগিরি!!! 
যাই হোক প্রায় বেলা ১১টার পরে আমরা পৌঁছলাম নীলগিরি। নীলগিরি’র কথা আর নতুন করে কিছু বলার নেই। যারা বান্দারবান সম্পর্কে বেড়ানোর জন্য কখনো খোঁজ করেছেন সবার আগেই শুনেছেন নীলগিরির কথা। এবার নীলগিরির আর্মিদের তৈরি কমপ্লেক্স এর বেশী করে ছবি তুলেছি, পাহাড়ের নয়। চমৎকার এই জায়গায় সামনে এক বর্ষায় রাত কাটানোর ইচ্ছা আছে। তবে একটি কথা যারা সাজেক যান নাই, তাদের বলি, সাজেক কিন্তু নীলগিরি চাইতেও অনেক সুন্দর। অনেক! এটা সম্পূর্ণই আমার ব্যাক্তিগত অভিমত। তো নীলগিরিতে ঘণ্টা দুয়েক কাটিয়ে আমরা ফিরতি পথ ধরলাম।
ফিরতি পথে চিম্বুক পাহাড়ে আধঘণ্টার যাত্রা বিরতি নিলাম। সেখান থকে আবার মিনিট বিশেকের বিরতি ছিল শৈলপ্রপাতে। এই করে করে বেলা তিনটার পর আমাদের গাড়ী থামলো সেই ‘তাজিন ডং’ রেস্টুরেন্ট। সকালেই আমরা লাঞ্চের অর্ডার করে গিয়েছিলাম। ড্রাইভার আর তার সহকারীকে নিয়ে ছয়জন মিলে মাছ, চিকেন, সবজি, ডাল দিয়ে সেইরকম একটা লাঞ্চ সেরে নিলাম; সাথে শেষে অবশ্যই চা। 
এখান থেকে বের হয়ে আমরা আর হোটেলে ঢুকি নাই, সোজা চলে এলাম স্বর্ণমন্দিরে। সেখানে আধঘণ্টা থেকে একেবারে নীলাচল। সবার মতামতে মেঘলা বাদ পড়ল। নীলাচলে গতবার যখন এসেছিলাম বিরল এক ঘটনার সাক্ষী হয়েছিলাম। ঠিক সূর্যাস্তের আগে ঠিক উল্টো দিকে অর্থাৎ পূর্ব দিকে পূর্ণিমার চাঁদ ছিল। কিন্তু আমাদের অবাক করে দিয়ে এক বিশাল রংধনু উঠেছিল আকাশে আর চাঁদটা ছিল ঐ রংধনুর ঠিক মাঝখানে। একবার কল্পনা করুণ দৃশ্যটা!!! যাই হোক এবার তেমন কিছু পাই নাই, আর পাওয়ার কথাও না।
এগুলো দৈবক্রমে ঘটে থাকে। তবে এবারো নীলাচল হতে পুরো শেষ বিকেল, সূর্যাস্ত, পুরো সন্ধ্যা পার করে রাত সাতটা পর্যন্ত ছিলাম। নয়টায় ঢাকা ফেরার গাড়ী, তাই ফিরতে হল হোটেলে। হোটেলে ফিরে ফ্রেশ হয়ে ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে হালকা খাবার খেয়ে আমরা কাউণ্টারে পৌঁছলাম। নয়টা পাঁচে গাড়ী ছেড়ে দিল, কানে হেডফোন গুজে দিয়ে তিনদিনের এই স্মরণীয় ট্যুরের টুকরো টুকরো স্মৃতিগুলো ভাবতে ভাবতে ঘুমের রাজ্যে হারানোর চেষ্টায় লিপ্ত হলাম। কারণ পরের দিন সবার অফিস! দেখুন তৃতীয় দিনের কিছু ছবি উপরের ছবি স্লাইডারে... 

ভ্রমণকালঃ ১৭ মে, ২০১৪

আগের পর্ব

Translate

বোকা পর্যটকের কথা

মানুষ যেমন হঠাৎ করেই কারো প্রেমে পড়ে, ঠিক তেমনই করে আমিও প্রেমে পড়েছি ভ্রমণের। আজব এক নেশায় নেশাগ্রস্থ, কবে থেকে জানি না। তবে নিজের আর্থ-সামাজিক অবস্থানে লড়াই করে টিকে থাকার পর ভ্রমণে মনঃসংযোগ করতে উদ্যত হই। সেই থেকে যখনই সময়-সুযোগ হয় বেড়িয়ে পড়ি ঘর হতে, ভ্রমণের তরে। মজার ব্যাপার হল, আমি সাইক্লিস্ট নই, সাঁতার কাটতে পারি না, না পারি ট্র্যাকিং, হাইকিং, ক্লাইম্বিং। কোন ধরণের এডভেঞ্চারধর্মী কোন গুণই আমার নেই, শুধু আছে ভ্রমণের শখ আর অদম্য ইচ্ছাটুকু। আর সেই ইচ্ছা থেকেই সময় সময় আমার ঘুরে বেড়ানো আর সেই গল্পগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখা এই ডায়েরীতে। আমার এই লেখাগুলো বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এবং ব্যক্তিগত ডায়েরীতে লেখা ছিল; সেগুলো সব একত্রে সংরক্ষণ করে রাখার নিমিত্তেই এই ব্লগ। যদি আপনাদের কারো এই লেখাগুলো কোন কাজে লাগে তবে আমার পরিশ্রম কিছুটা হলেও সার্থক হবে।

পোস্ট সংরক্ষণাগার

যোগাযোগ ফর্ম

প্রেরণ