দুবলহাটি জমিদার বাড়ি - "বাংলার জমিদার বাড়ীঃ পর্ব ০৫"

দুবলহাটি জমিদার বাড়ি  - 'বাংলার জমিদার বাড়ীঃ পর্ব ০৫'

দুবলহাটি জমিদার বাড়ি

  • দুবলহাটি জমিদার বাড়ি
  • দুবলহাটি জমিদার বাড়ি
  • দুবলহাটি জমিদার বাড়ি
  • দুবলহাটি জমিদার বাড়ি
  • দুবলহাটি জমিদার বাড়ি
  • দুবলহাটি জমিদার বাড়ি
  • দুবলহাটি জমিদার বাড়ি
  • দুবলহাটি জমিদার বাড়ি
  • দুবলহাটি জমিদার বাড়ি
  • দুবলহাটি জমিদার বাড়ি
  • দুবলহাটি জমিদার বাড়ি
  • দুবলহাটি জমিদার বাড়ি
ঐতিহাসিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ নওগাঁর জনপদে অবস্থিত রাজপ্রাসাদগুলো ধ্বংসের মুখে পতিত হওয়া সত্ত্বেও আজো এগুলো আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি, নওগাঁ শহর হতে প্রায় ৬ কিলোমিটার দক্ষিণে দুইশত বছরের পুরাতন স্থাপনা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দুবলহাটি জমিদার বাড়ী। অনেকে একে দুবলহাটি রাজবাড়ী নামেও অভিহিত করে থাকেন। যদিও “রাজবাড়ী” শব্দটি ব্যাবহারের কোন ইতিহাস জানা যায় নাই। ধারণা করা হয়, আগেকার লোকেরা জমিদার তথা ধনীশ্রেণীর লোকদের রাজা-বাদশা বলে অভিহিত করে থাকত; আর সেখান হতেই হয়ত রাজবাড়ী হিসেবে এই জমিদার বাড়ী চিহ্নিত হয়েছে। সারা বাংলাদেশ জুড়ে যে সকল জমিদার বাড়ীগুলো দাঁড়িয়ে আছে সেগুলোর তুলনায় দুবলহাটি জমিদার বাড়ী ব্যাতিক্রম। বিশাল অঞ্চলজুড়ে এর ব্যাপ্তি যা কিনা ভাওয়াল রাজবাড়ী’র কথা মনে করিয়ে দেয়। 
জমিদার বাড়ি নিয়ে ধারাবাহিক লেখা শুরু করার পর এই বিষয় নিয়ে অল্পবিস্তর ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। উন্নতবিশ্বে যে সকল স্থাপনা হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষিত হয়, আমাদের দেশে সেইসকল স্থাপনা পড়ে থাকে অবহেলায়, ক্ষয়ে যায় অস্থি-মজ্জা সকল, ঘুণে ধরে বিচূর্ণ হয় ইতিহাসের পাতা। অপূর্ব সকল স্থাপনা আর নির্মাণশৈলী নিয়ে আমাদের বাংলাদেশের আনাচে কানাচেতে পড়ে আছে অসংখ্য জমিদার বাড়ি, রাজবাড়ীসহ আরও কত স্থাপনা। আর এই সব স্থাপনার কিছু কথা এই বোকা মানুষটার ছেঁড়া খাতায় লিখে রাখার প্রয়াস হল এই “বাংলার জমিদার বাড়ী” সিরিজ। 
জমিদার বাড়ী সিরিজের সব লেখাঃ "বাংলার জমিদার বাড়ী
১৭৯৩ সালে লর্ড কর্ণওয়ালিসের কাছ থেকে ১৪ লক্ষ ৪ শত ৯৫ টাকা দিয়ে দুবলাহাটি এলাকার পত্তন নিয়ে জমিদারী পরিচালনা শুরু করেন জমিদার কৃষ্ণনাথ। কৃষ্ণনাথ এর কোন পুত্র সন্তান না থাকায় তার কন্যার পুত্র (নাতি) হরনাথ রায় ১৮৫৩ সালের জমিদারীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এই হরনাথ রায়ের সময়েই দুবলাহাটি রাজ্যের ব্যাপক বিস্তার ঘটে। এসময় তিনি দুবলহাটি রাজ প্রাসাদের সৈৗন্দর্য বৃদ্ধি, নাট্যশালা নির্মাণ ও প্রজা সাধারণের সুপেয় পানীয় জলের কষ্ট দূর করার জন্য রাজ প্রাসাদের পাশে অনেক পুকুর খনন করেন। হরনাথ রায় চৌধুরী ও তার পুত্র কৃঙ্করীনাথ রায় চৌধুরীর সময় এর ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়। প্রাসাদের বাইরে ছিল দীঘি, মন্দির, স্কুল, দাতব্য চিকিৎসালয়, ১৬ চাকার রথসহ বিভিন্ন স্থাপনা। প্রাসাদের ভেতরে ও বাইরে ছিল নাটক এবং যাত্রামঞ্চ। সেখানে নিয়মিত নাটক ও যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হতো। 
জমিদারি প্রথা বিলুপ্তি হওয়ার পর হরনাথ রায় স্বপরিবারে চলে যান ভারতে। এই জমিদার বংশের স্মৃতি স্বরূপ থেকে যায় বিশাল সুরম্য অট্টালিকা যার নাম হয় দুবলাহাটি জমিদার বাড়ী তথা রাজবাড়ি। ইট-সুরকিতে নির্মিত এ বাড়িতে আছে সুরম্য প্রাসাদ, দুর্গা মন্দির, রঙ্গমঞ্চ। বাড়ির মূল ভবনটিতে কমপক্ষে একশটি কক্ষ আছে। এছাড়া কারুকাজময় বারান্দা, রঙিন কাচের অলংকরণ, নানা ধরনের ভাস্কর্য এ জমিদার বাড়ির প্রধান আকর্ষণ। পরর্তীতে এটি সরকারী সম্পদ হিসাবে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ দেখভালের দায়িত্ব নেয় এবং বর্তমানে এটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনেই রয়েছে। 
কিভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে যে কোন পরিবহনে করে আপনি নওগাঁ চলে আসেন। ঢাকার বাইরের হলে সেখান থেকে যে যানে করে নওগাঁ পৌঁছানো সহজ তাতে করে নওগাঁ এসে আপনি নওগাঁ সদর থেকে রিকশা ভ্যান, অথবা ব্যাটারিচালিত রিকশা করে আপনি সরাসরি চলে আসতে পারেন এই দুবলহাটি জমিদার বাড়ীতে। এই যাত্রাটুকুতে ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ২০-৩০ টাকা আর সময় লাগবে ৩০ মিনিটের মত।

তথ্য এবং ছবি কৃতজ্ঞতাঃ

Translate

বোকা পর্যটকের কথা

মানুষ যেমন হঠাৎ করেই কারো প্রেমে পড়ে, ঠিক তেমনই করে আমিও প্রেমে পড়েছি ভ্রমণের। আজব এক নেশায় নেশাগ্রস্থ, কবে থেকে জানি না। তবে নিজের আর্থ-সামাজিক অবস্থানে লড়াই করে টিকে থাকার পর ভ্রমণে মনঃসংযোগ করতে উদ্যত হই। সেই থেকে যখনই সময়-সুযোগ হয় বেড়িয়ে পড়ি ঘর হতে, ভ্রমণের তরে। মজার ব্যাপার হল, আমি সাইক্লিস্ট নই, সাঁতার কাটতে পারি না, না পারি ট্র্যাকিং, হাইকিং, ক্লাইম্বিং। কোন ধরণের এডভেঞ্চারধর্মী কোন গুণই আমার নেই, শুধু আছে ভ্রমণের শখ আর অদম্য ইচ্ছাটুকু। আর সেই ইচ্ছা থেকেই সময় সময় আমার ঘুরে বেড়ানো আর সেই গল্পগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখা এই ডায়েরীতে। আমার এই লেখাগুলো বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এবং ব্যক্তিগত ডায়েরীতে লেখা ছিল; সেগুলো সব একত্রে সংরক্ষণ করে রাখার নিমিত্তেই এই ব্লগ। যদি আপনাদের কারো এই লেখাগুলো কোন কাজে লাগে তবে আমার পরিশ্রম কিছুটা হলেও সার্থক হবে।

পোস্ট সংরক্ষণাগার

যোগাযোগ ফর্ম

প্রেরণ